অপরাধ ঠেকাতে ভরসা যন্ত্রে

সদর শহরের পথে দু’শো সিসি ক্যামেরা

গত জুলাই মাসের ঘটনা। তমলুক শহরের এলআইসি অফিস ভবনে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা থেকে ৫ লক্ষ টাকা তুলে সাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন এক ব্যবসায়ী।

Advertisement

আনন্দ মণ্ডল

তমলুক শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:৪০
Share:

প্রতীকী ছবি।

গত জুলাই মাসের ঘটনা। তমলুক শহরের এলআইসি অফিস ভবনে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা থেকে ৫ লক্ষ টাকা তুলে সাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন এক ব্যবসায়ী। ব্যাঙ্ক থেকে কয়েকশো মিটার এগোনোর পরেই মালিজঙ্গল পাড়ার কাছে মোটর বাইকে তাঁর পিছু নেয় দুষ্কৃতী দল। ওই ব্যবসায়ীর মাথায় লোহার রডের আঘাত করে টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে চম্পট দিয়েছিল তারা।

Advertisement

আহত ব্যবসায়ীকে বাসিন্দারা উদ্ধার করে তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। ভরদুপুরেই শহরের রাস্তায় এই হামলার ঘটনায় পুলিশ তদন্তে নামলেও দুষ্কৃতীদের হদিস পেতে বেশ কিছুদিন কেটে যায়। এলাকায় পুলিশের টহলদারির কোনও ব্যবস্থা নেই। অথচ শহরের অন্যতম দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হ্যামিল্টন ও সান্ত্বনাময়ী হাইস্কুলের কয়েকশো পড়ুয়া ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে। ঘটনার জেরে জেলা সদর শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এ ধরনের অপরাধের ঘটনা রুখতে শহরে পুলিশি টহলদারি বাড়ানোর দাবি ওঠে। ঘটনার জেরে নড়েচড়ে বসেন পুর কর্তৃপক্ষ। শহরের রাস্তায় পুলিশি টহলহের পাশাপাশি অপরাধ ঠেকাতে সিসি (ক্লোজ সার্কিট) ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারিতে উদ্যোগী হয় তমলুক পুরসভা। এর জন্য শহরের ভিতরে বিভিন্ন রাস্তা, বাজার এবং রূপনারায়ণ নদীবাঁধের বাইপাস সড়কে সিসি ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা হয়েছে। সব মিলিয়ে শহর জুড়ে ২০০টিরও বেশি সিসি ক্যামেরা বসানো হবে বলে জানিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। তমলুকের পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ সেন বলেন, ‘‘শহরের বিভিন্ন রাস্তা, বাজার, মোড় সহ গুরুত্বপূর্ণস্থানে সিসি ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা হয়েছে। এ বিষয়ে ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করে প্রকল্প তৈরি হয়েছে। ‘গ্রিন সিটি’ প্রকল্পের বরাদ্দ অর্থে শীঘ্রই সিসি ক্যামেরা বসানো হবে। সিসি ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকবে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন অপরাধের ঘটনা ও সড়কে বেপোরোয়াভাবে যান চলাচল বন্ধ করতে জেলা পুলিশের উদ্যোগে কয়েক বছর আগে হলদিয়া–মেচেদা রাজ্য সড়কের মানিকতলামোড়, হাসপাতাল মোড়, নিমতলা মোড় ও তমলুক-পাঁশকুড়া রাজ্য সড়কের জেলখানা মোড়, বড়বাজার মোড়-এর মতো জনবহুল, ব্যস্ত এলাকায় সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। তবে শহরের অধিকাংশ রাস্তায় এবং মোড়ে সিসি ক্যামেরার নজরদারি নেই বলে অভিযোগ। কয়েকটি মাত্র সিসি ক্যামেরায় নজরদারিতে অপরাধ ঠেকানো বা অপরাধীদের চিহ্নিত করা যে সম্ভব নয় তা মানছেন পুলিশ কর্তারাই। এর ফলে মালিজঙ্গল পাড়ার মতো ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকায় প্রকাশ্যে রাস্তায় ব্যবসায়ীর উপর হামলায় দুষ্কৃতীদের ধরতে পুলিশকে বেগ পেতে হয় বলে অভিযোগ।

Advertisement

পুরসভা সূত্রে খবর, শহরে স্টিমারঘাট, বর্গভীমা মন্দির, পুরসভার অফিস, হ্যামিল্টন স্কুল, সান্ত্বনাময়ী হাইস্কুল, শালগেছিয়া হাইস্কুল, তমলুক কলেজ এবং বাদামতলার মতো গুরুত্বপূর্ণ ও জনবহুল এলাকায় সিসি ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা হয়েছে। এছাড়াও রাধাবল্লভপুর থেকে বুদ্ধ পার্ক হয়ে চককামিনা পর্যন্ত নদীবাঁধ বরাবর বাইপাস সড়কেও বিভিন্ন জায়গায় সিসি ক্যামেরা বসানো হবে। পুরপ্রধানের দাবি, ‘‘এর ফলে শহরের প্রায় সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাই সিসি ক্যামেরার নজরদারির আওতায় চলে আসবে। এতে অপরাধীদের ঠেকানো ও চিহ্নিত করার ক্ষেত্রেও পুলিশের সুবিধা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন