Joint Entrance Exam

Joint Entrance: উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম দশে একই স্কুলের ২২ কৃতী বহু পিছিয়ে জয়েন্টে

পিংলার জলচক নাটেশ্বরী নেতাজি বিদ্যায়তনের ২২জনের নাম ছিল এ বার উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা তালিকায়।

Advertisement

দেবমাল্য বাগচী

পিংলা শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২২ ০৭:৫৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম দশে পশ্চিম মেদিনীপুরের একই স্কুলের ২২ জন পড়ুয়ার নাম থাকা নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল। রাজ্যের জয়েন্ট এন্ট্রান্সে অবশ্য সেই সব কৃতীরা অনেকটাই পিছিয়ে। কারও র‌্যাঙ্ক ৪ হাজার, কারও ২৫ হাজার, কারও বা ২৮ হাজার।

Advertisement

পিংলার জলচক নাটেশ্বরী নেতাজি বিদ্যায়তনের ২২জনের নাম ছিল এ বার উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা তালিকায়। তাঁদের অন্যতম দ্বিতীয় স্থানাধিকারী সায়নদীপ সামন্ত। কেমন র‍্যাঙ্ক করেছে ছেলে? সায়নদীপের বাবা প্রাথমিক শিক্ষক মদন সামন্ত বললেন, “বলার মতো নয়। ওই ২৫ হাজারের মতো। অনেকটা পিছিয়ে গিয়েছে।’’ সঙ্গে জুড়লেন, ‘‘আসলে ওর লক্ষ্য চিকিৎসক হওয়া। সেই প্রস্তুতি নিচ্ছে। জয়েন্টের জন্য আলাদা প্রস্তুতি নেয়নি।” উচ্চ মাধ্যমিকে তৃতীয় হওয়া পরিচয় পারি অবশ্য বলেছিলেন, তিনি ইঞ্জিনিয়ার হতে চান। রাজ্য জয়েন্টে তাঁর র‍্যাঙ্ক ৪,১৯৮। এখন পরিচয় বলছেন, “জয়েন্টের র‍্যাঙ্ক আরও ভাল হবে আশা করেছিলাম। এই র‍্যাঙ্কে আর কাউন্সেলিংয়ে যাব কি না ভাবছি।’’ সঙ্গে যুক্তি, ‘‘আসলে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ হওয়ার তিনদিন পরেই জয়েন্ট থাকায় প্রস্তুতি নিতে পারিনি।”

জলচকের এই স্কুল থেকে চতুর্থ স্থানাধিকারী পিঙ্কি খাতুন জানালেন, “জয়েন্টে ওবিসি ক্যাটাগরিতে ২ হাজার র‍্যাঙ্কে রয়েছি। আর সার্বিকভাবে ২২ হাজার র‍্যাঙ্ক হয়েছে। তবে আমার লক্ষ্য মেডিক্যাল।” রাজস্থানের কোটায় নিটের প্রস্তুতিও নিচ্ছেন পিঙ্কি। তবে অষ্টম স্থানাধিকারী সাহেব দাস অধিকারীর লক্ষ্য ইঞ্জিনিয়ারিংই ছিল। যদিও র‌্যাঙ্ক হয়েছে প্রায় ২৮ হাজার। সাহেবের কথায়, “ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ২৮ হাজার, তবে ফার্মেসি জয়েন্টে ২২ হাজার মতো হয়েছে। কেন খারাপ ফল হল বুঝতে পারছি না।”

Advertisement

যে স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে গন্ডায় গন্ডায় কৃতী, তাঁদের জয়েন্টে এই হাল কেন? প্রধান শিক্ষক তরুণকুমার চক্রবর্তীর জবাব, “রাজ্য জয়েন্টে ফল কেন খারাপ হল সেটা পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। তবে আমাদের ২২জন কৃতীর অধিকাংশেরই লক্ষ্য চিকিৎসক হওয়া। তাই এই জয়েন্টে তেমন প্রস্তুতি ছিল না।”

শিক্ষক মহলের অভিজ্ঞতা অবশ্য বলছে, উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠক্রমের ভিত্তিতেই জয়েন্টের প্রশ্নপত্র তৈরি হয়। ফলে, যে সব মেধাবী পড়ুয়া উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম দশে থাকছেন, তাঁরা জয়েন্টে কয়েকশোর মধ্যে অন্তত র‌্যাঙ্ক করবেন এটাই প্রত্যাশিত। বিগতদিনে আরও দেখা গিয়েছে, উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম দশে থাকা অনেক কৃতীর ঝোঁক মেডিক্যালে থাকলেও ইঞ্জিনিয়ারিং জয়েন্টে প্রথম একশোয় স্থান পেয়েছেন তাঁরা। জলচকের এই কৃতীদের ক্ষেত্রে কেন সবটাই ব্যতিক্রম, প্রশ্ন তা নিয়েই। আর সেই সূত্রেই ফের চর্চায় উচ্চ মাধ্যমিকে হোম সেন্টারের সুফল।

এ বার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ নিযুক্ত ‘সেন্টার সেক্রেটারি’ ছিলেন হিজলি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক রবিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলছেন, “সেন্টার সেক্রেটারি হিসাবে কাজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, হোম সেন্টারের সুযোগ বহু স্কুল কর্তৃপক্ষ নিয়েছেন। পিংলার জলচকের একই স্কুলের ২২ জনের প্রথম দশে থাকাও হোম সেন্টারের সুফল। সেটা এই জয়েন্টের ফলেও প্রমাণিত।’’ তিনি আরও জুড়ছেন, ‘‘আমার স্কুলের যে ছাত্র উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৬৪ পেয়েছে সে-ও জয়েন্টে ৯০ র‍্যাঙ্ক করেছে। বিগত দিনের ফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, প্রস্তুতি না থাকলেও যারা উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম দশ স্থানাধিকারী, তারা অন্তত জয়েন্টে দেড়শোর মধ্যে র‌্যাঙ্ক করেছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন