সরকারি কলেজে বহিরাগতদের অবাধ আনাগোনায় রাশ টানা যায়নি। তা বলে বহিরাগতদের চিহ্নিত করতে তো বাধা নেই! তাই কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজ চত্বরের চারপাশে লাগানো হচ্ছে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। কলেজ কর্তৃপক্ষ এমন ভাবে ক্যামেরা বসাচ্ছেন, যাতে কলেজ ভবনের বাইরে চারপাশে বহু দূর পর্যন্ত নজরদারি চালানো যায়।
পড়ুয়াদের একাংশের অভিযোগ, শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের ছত্রছায়াতেই বহিরাগতরা কলেজে ঢোকে। ২০১৫-র জানুয়ারির পরে কলেজে ছাত্রসংসদের নির্বাচন হয়নি। পুরনো ছাত্র সংসদের কার্যকালের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। ইতিমধ্যে পুরনো ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কলেজ ছেড়েছেন। ফলে, স্থানীয় টিএমসিপি-র নেতাদের এখন অবারিত দ্বার এই কলেজে। বিভিন্ন গোষ্ঠীর নেতাদের অনুগামীরাও নিয়মিত কলেজে ঢোকে। যাদের বেশির ভাগই কলেজ পড়ুয়া নন।
রাজ কলেজে বহিরাগতদের দাদাগিরিতে রাশ টানার জন্য সম্প্রতি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তরফে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি টিএমসিপি-র রাজ্য সভানেত্রী জয়া দত্ত রাজ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিমাইচাঁদ মাসান্ত-র সঙ্গে দেখা করেছিলেন। ওই দিন জয়াকে নিমাইবাবু জানিয়েছিলেন, কলেজে প্রতি দিন বেশ কিছু বহিরাগত দাপিয়ে বেড়ায়। এরপরই কলেজ চত্বরে সিসি ক্যামেরা লাগানোর ঘটনায় জল্পনা শুরু হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিমাইচাঁদ মাসান্ত বলেন, “বিভিন্ন সময় বহিরাগতদের সম্পর্কে পুলিশ-প্রশাসন এবং ছাত্র সংগঠনের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব আমাদের কাছে তথ্য জানতে চান। এ বার বহিরাগতদের চিহ্নিত করার জন্য বিশেষত, কলেজ চত্বরের চারপাশে বেশি করে সিসি ক্যামেরা লাগানো হচ্ছে।” টিএমসিপি-র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভানেত্রী দেবলীনা নন্দী বলেন, “শুধু সিসি ক্যামেরা বসালেই চলবে না। বহিরাগতদের চিহ্নিত করে কলেজে তাদের ঢোকা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষকে উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে হবে।” দেবলীনার দাবি, বহিরাগতদের কোনও মতে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। টিএমসিপি-র প্রাক্তন জেলা সহ সভাপতি সৌমেন আচার্য বলেন, “কলেজের শিক্ষকরাও কখন আসছেন এটাও সিসি ক্যামেরাও রেকর্ড হয়ে থাকবে। অত্যন্ত ভাল উদ্যোগ।”