ছ’ঘন্টার ব্যবধানে তিন বার গণ-ধর্ষণ, গ্রেফতার তিন

পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘অভিযুক্ত তিন জনকেই ধরা হয়েছে। যাবতীয় খুঁটিনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৯ ০০:৩০
Share:

এসপি অফিসের সামনে পরিচালিকা সংগঠনের বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।

ছ’ঘন্টার ব্যবধানে তিন বার গণ-ধর্ষণের শিকার হয়েছেন আদিবাসী যুবতী। গত রবিবার মেদিনীপুর শহরের এই ঘটনায় ধৃত তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারীরা এমনটাই জানতে পেরেছেন বলে পুলিশের এক সূত্রে খবর। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘অভিযুক্ত তিন জনকেই ধরা হয়েছে। যাবতীয় খুঁটিনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

Advertisement

পুলিশের এক সূত্রে খবর, নির্যাতিতা যুবতী তদন্তকারীদের জানিয়েছিলেন, যে তিন যুবক এই ঘটনায় জড়িত তাদের একজনকেই তিনি চেনেন। তার নাম অর্জুন রায়। অর্জুনই তাঁকে ভুল বুঝিয়ে রবিবার রাতে রাস্তা থেকে নিয়ে গিয়েছিল। অর্জুনের সঙ্গে আরও দু’জন ছিল। তাদের চেনেন না বলেই জানিয়েছেন ওই যুবতী।

মেদিনীপুর মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন ওই যুবতীর শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল। হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁকে দিঘা নিয়ে যেতে চেয়েছিল অভিযুক্তেরা। তাঁকে বাইকে তোলা হয়েছিল। পরে বাইকের তেল ফুরিয়ে যায়। ধৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, গত রবিবার সন্ধ্যা ৮টা নাগাদ বছর একুশের ওই যুবতীকে প্রথমে মেদিনীপুর শহরতলির খয়েরুল্লাচকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে একটি বাড়িতে নিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করে একাধিক যুবক। পরে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় শহরতলির ধর্মায়। সেখানে নির্যাতন চলে এক মদের আড্ডায়। পরে ওই যুবতীকে শহরের নবীনাবাগের কাছে নিয়ে আসা হয়। সেখানে ফের তাকে গণধর্ষণ করা হয়। রাত তখন প্রায় ২টো। এরপর নির্যাতিতাকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে চম্পট দেয় অভিযুক্তেরা। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, ধর্ষিতার দাবির সঙ্গে অভিযুক্তদের বক্তব্য মিলিয়ে দেখা হবে।

Advertisement

সোমবার সকালে স্থানীয়রা মেয়েটিকে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে মেদিনীপুর মেডিক্যালে নিয়ে আসে। সোমবার রাতে মেডিক্যালে এসে নির্যাতিতার সঙ্গে কথা বলেন জেলার পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া। ঠিক কী হয়েছে, প্রাথমিকভাবে জেনে নেন। এরপরই অভিযুক্তদের খোঁজ শুরু হয়।

পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার রাতে পুলিশের দল নিয়ে ঘটনাস্থলে যান কোতোয়ালি থানার অফিসার তরুণ দে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে তিনি বাকি দুই অভিযুক্তকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করেন। পরে এক সূত্র মারফত ওই দুই যুবকের নাম- পরিচয় জেনেও যান। সোমবার রাতেই পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায় রবি দাস ওরফে দেবু এবং শেখ আজিমোশান আলি ওরফে বাবাই। রবির বাড়ি মীরবাজারে। আজিমোশানের বাড়ি ধর্মায়। মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে অর্জুন রায়।

যুবতীর বাড়ি নতুনবাজারে। তবে এখন হবিবপুরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে তিনি থাকতেন। সেই আত্মীয় এ দিন বলেন, ‘‘রবিবার সন্ধ্যায় ও বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। আর ফেরেনি। সোমবার দুপুরে জানতে পারি, পুলিশ ওকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। যারা ওর এই পরিণতি করল, তাদের কঠোর শাস্তি চাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন