খাল থেকে উদ্ধার দুর্ঘটনাগ্রস্ত সেই বাইক। রবিবার নিজস্ব চিত্র
দু’টি পৃথক পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল চার মোটরসাইকেল আরোহীর। পুলিশ সূত্রের খবর, শনিবার রাতে প্রচণ্ড গতিতে যাওয়ার সময় পাঁশকুড়া শহর সংলগ্ন কালিন্দীপুর গ্রামে গাছে ধাক্কা মারে একটি মোটর সাইকেল। মৃত্যু হয় মোটর সাইকেলের দুই আরোহী সাহেব সিংহরায় (১৮) এবং রবীন দাসের (১৮)। শনিবার সন্ধ্যায় চণ্ডীপুর থানার মগরাজপুরে লরির ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে মোটরসাইকেল চালক বাবু খামারি (২১) এবং আরোহী সুন্দরী প্রধানের (৬১)।
পুলিশ সূত্রের খবর, পাঁশকুড়া শহর সংলগ্ন দক্ষিণ চাঁচিয়াড়া গ্রামের বাসিন্দা সাহেব পেশায় টোটোচালক। দিন পনেরো আগে বেসরকারি ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে একটি মোটরসাইকেল কেনেন তিনি। বন্ধুরা আবদার করেন, নতুন মোটরসাইকেল কেনার জন্য খাওয়াতে হবে। সেইমতো শনিবার রাতে খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করেছিলেন সাহেব। সঙ্গে রবীন ছা়ড়াও ছিলেন আর এক বন্ধু পল্লব দাস। রবীনের বাড়ি সুরানানকার এলাকায়। খাওয়াদাওয়ার পর রাত ১২টা নাগাদ রবীনকে মোটরসাইকেলে তাঁর বাড়িতে পৌঁছতে যাচ্ছিলেন সাহেব। কিন্তু গভীর রাতেও বাড়ি না ফেরায় রবীনের পরিবারের লোকেরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। কিন্তু তাঁদের হদিস মেলেনি।
রবিবার কালিন্দীপুর গ্রামে রাস্তার উপর সাহেবের মোটরসাইকেল পড়ে থাকতে দেখেন তাঁর পরিবারের লোকেরা। পাশে খালের জলে ভাসছিল সাহেবের জুতো। সেই খাল থেকেই পরে সাহেবের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। খোঁজ চালিয়ে সেখানেই মেলে রবীনের দেহ। পাঁশকুড়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য তমলুক জেলা হাসপাতালে পাঠায়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, প্রচণ্ড জোরে মোটর সাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় সেটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছে ধাক্কা মেরে খালে পড়ে যায়। খালের জলে তলিয়ে গিয়েই দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। তা ছাড়া দুই মোটরসাইকেল আরোহীর কারও মাথাতেই হেলমেট ছিল না বলে পুলিশ সূত্রে খবর। সাহেবের মা ঝর্না সিংহ রায় বলেন, ‘‘কয়েকদিন আগে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা নিয়ে মোটরসাইকেল কিনেছিল সাহেব। শনিবার রাতে ওরা তিনজনে মিলে কোথায় গিয়েছিল। সাড়ে ১১ টা নাগাদ ফিরে এসে সাহেব আমাদের বাড়িতে পল্লবকে রেখে দিয়ে বেরিয়ে যায়। এমনটা ঘটবে ভাবতে পারিনি।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ আত্মীয়া সুন্দরীদেবীকে মোটর সাইকেলে চাপিয়ে চণ্ডীপুর বাজার থেকে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন বাবু। মগরাজপুর বাজার থেকে চকপাটনাগামী গ্রামীণ সড়ক ধরে কিছুটা যাওয়ার পরেই কয়ালচক গার্লস হাইস্কুলের কাছে একটি লরিকে পাশ কাটাতে গিয়ে মোটর সাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারায়। মাটিতে পড়ে যান দু’জনই। লরির চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় তাঁদের। ঘটনার পর লরি ফেলে চালক পালিয়ে যায়। চণ্ডীপুর থানার পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। পুলিশের অনুমান, লরিটিকে ওভারটেক করতে গিয়েই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বাইকটি।
পুলিশ লরিটি আটক করেছে।