ডোরাকাটা খুনের স্মৃতি বয়ে বাঘ বাঁচানোর বার্তা  

বাঘ বাঁচানোর আর্জি নিয়ে বাইকে করে ঘুরতে ঘুরতে সল্টলেকের দম্পতি এসে পড়লেন ঝাড়গ্রামে। বছর খানেক আগে যেখানে এসে করুণ পরিণতি হয়েছিল সুন্দরবনের রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:২০
Share:

ঝাড়গ্রামের রাস্তায় রথীন্দ্রনাথ ও গীতাঞ্জলি। নিজস্ব চিত্র

বাঘ বাঁচানোর আর্জি নিয়ে বাইকে করে ঘুরতে ঘুরতে সল্টলেকের দম্পতি এসে পড়লেন ঝাড়গ্রামে। বছর খানেক আগে যেখানে এসে করুণ পরিণতি হয়েছিল সুন্দরবনের রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের। পশ্চিম মেদিনীপুরের বাঘঘরার জঙ্গলে পিটিয়ে মারা হয়েছিল ডোরাকাটাকে। সে খবর শুনে মন ভারাক্রান্ত হয়েছিল রথীন্দ্রনাথ দাস ও স্ত্রী গীতাঞ্জলি দাসের। শুক্রবার সে প্রসঙ্গ উঠতেই রথীন্দ্রনাথ বললেন, ‘‘এ সবের জন্যই তো আমার আমার ঝাড়গ্রাম আসা।’’

Advertisement

বন্যপ্রাণ নিয়ে কাজ করে চলা একটি আন্তর্জাতিক স্তরের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মী রথীন্দ্রনাথ ও গীতাঞ্জলি গত ১৫ তারিখ থেকে কলকাতার সেন্ট্রাল পার্ক থেকে শুরু করেছেন এই সফর। মোটরবাইকে ১৩ টি দেশ ঘোরার কথা তাঁদের। এ দিন বাইকে করে মানিকপাড়ার বন দফতরের বনবান্ধব উৎসবের শেষ পর্যায়ে যোগ দেন দাস দম্পতি। এক বছর আগে বাঘ নিয়ে হইচইয়ের খবর যেমন তাঁরা পেয়েছিলেন, সম্প্রতি নেকড়ের হানায় একাধিক গ্রামবাসীর আক্রান্ত হওয়ার খবরও তাঁর নজর এড়ায়নি। কিছুদিন আগেও ঝাড়গ্রাম জেলায় দু’টি নেকড়েকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। প্রতিদিনই বন্যপ্রাণী নিধন চলছে। এই প্রসঙ্গে রথীন্দ্রনাথ জানান, বন্যপ্রাণ বেঁচে রয়েছে জঙ্গলকে আঁকড়ে ধরে। জঙ্গলের প্রকৃত রক্ষাকর্তা হচ্ছে বাঘ। খাদ্যশৃঙ্খল ও বাস্তুতন্ত্র পিরামিডের সর্বপ্রথম স্তরে রয়েছে বাঘ। বাঘ বাঁচলে, জঙ্গল বাঁচবে। জঙ্গল বাঁচলে সমগ্র প্রাণিকুল এবং সর্বোপরি মানুষ বাঁচবে। জঙ্গল ও বন্যপ্রাণী ধ্বংস ঠেকানো না গেলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ভয়াবহ বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া হবে। নিজেদের স্বার্থে বন্যপ্রাণী ও বনকে বাঁচাতে হবে।

শুধু ঝাড়গ্রাম নয়। দাস দম্পতির সফর তালিকায় রয়েছে ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার প্রত্যন্ত বনাঞ্চল।’ ভারত ছাড়াও মায়ানমার, তাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, লাওস, চিন, রাশিয়া, নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ যাবেন রথীন্দ্রনাথ ও গীতাঞ্জলি।

Advertisement

রথীন্দ্রনাথ কর্মসূত্রে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে দেখছেন জঙ্গলের পরিবেশ কীভাবে বিপন্ন হয়ে উঠেছে। সেই চোখে দেখা বন্যপ্রাণের সঙ্কটের পরিস্থিতিই রথীন্দ্রনাথকে এই কাজে নামতে বাধ্য করেছে বলে জানালেন তিনি। আজ, শনিবার গিধনি, বেলপাহাড়ি হয়ে বাঁকুড়ার ঝিলিমিলির উদ্দেশে যাবেন এই দম্পতি। এরপরে ভারতের অবশিষ্ট আরও ৪৯টি ব্যাঘ্র সংরক্ষিত বনাঞ্চলে পৌঁছবেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন