জোর করে বিয়ে, নারায়ণগড়ে স্কুলের দ্বারস্থ নবম শ্রেণির ছাত্রী

বাড়ির লোকজন জোর করে বিয়ে দিতে চাওয়ায় নিজের স্কুল নারায়ণগড় নবদ্বীপ বালিকা বিদ্যাপীঠে গিয়ে সবকিছু জানায় ময়না সিংহ। নারায়ণগড়ের দারিমারার বাসিন্দা ময়নার বিয়ের দিন ছিল শুক্রবার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নারায়ণগড় ও ঘাটাল শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৮ ০১:০৩
Share:

কন্যাশ্রী প্রকল্প থেকে সচেতনতা বাড়াতে প্রচার— নাবালিকা বিয়ে বন্ধে প্রচারের অন্ত নেই। তারপরেও যে সতেচনতা ফেরেনি তার প্রমাণ মিলল নারায়ণগড় ও ঘাটালে। নারায়ণগড়ে বিয়ে করতে চায় না বলে নবম শ্রেণির ছাত্রী দ্বারস্থ হয়েছিল স্কুল কর্তৃপক্ষের। স্কুলের হস্তক্ষেপে বন্ধ হল নাবালিকার বিয়ে। আর ঘাটালে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে নাবালিকা বিয়ে রুখল প্রশাসন!

Advertisement

বাড়ির লোকজন জোর করে বিয়ে দিতে চাওয়ায় নিজের স্কুল নারায়ণগড় নবদ্বীপ বালিকা বিদ্যাপীঠে গিয়ে সবকিছু জানায় ময়না সিংহ। নারায়ণগড়ের দারিমারার বাসিন্দা ময়নার বিয়ের দিন ছিল শুক্রবার। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাই আর দেরি না করে গোটা ঘটনার কথা চাইল্ড লাইন-সহ নারায়ণগড়ের বিডিওকে জানান। পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে বৃহস্পতিবার স্কুলে এসে ছাত্রীটির সঙ্গে কথা বলেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা। ময়নার বাড়িতেও যান তাঁরা।

স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা আগমনী কর মিশ্র বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার এক বান্ধবীকে সঙ্গে এনে মেয়েটি বিষয়টি জানায়। আমরা সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোতে জানাই। তাঁরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন।’’ প্রশাসনের আধিকারিকরা ছাত্রীটির বাড়িতে গিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলেন। আঠারো বছরের আগে মেয়ের বিয়ে দেওয়া দণ্ডনীয় তা বুঝতে পারেন মেয়েটির বাবা রাম সিংহ। মেয়ের উপযুক্ত বয়স না হলে বিয়ে নয়, এই মর্মে লিখিত নেয় প্রশাসন।

Advertisement

ঘাটাল শহরেও বৃহস্পতিবার অন্য এক নাবালিকার বিয়ের যা বতীয় প্রস্তুতি সেরে ফেলেছিলেন পরিজনেরা। ভাড়া করা হয়েছিল লজ। শুরু হয়ে গিয়েছিল রান্নাও। গোপন সূত্রে জানতে পেরে চাইল্ড লাইন ও ঘাটাল ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা সোজা নাবালিকার বাড়িতে গিয়ে হাজির হন। নাবালিকার বাবা-মাকে কম বয়সে বিয়ের কুফল সম্বন্ধে বোঝান চাইল্ড লাইনের প্রতিনিধিরা। তাঁদের থানায় নিয়ে গিয়ে ১৮ বছরের নীচে বিয়ে নয় এই মর্মেও মুচলেকা আদায় করে পুলিশ। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, ঘাটাল শহরের বাসিন্দা ওই নাবালিকা স্থানীয় একটি স্কুলে নবম শ্রেণি পযর্ন্ত পড়ে পড়াশোনা বন্ধ করে দেয়। পরিবারের আর্থিক অবস্থাও ভাল নয়। সেই কারণেই বিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। ওই নাবালিকার বাবা বলেন, “আমরা গরিব। কাছাকাছি এক জন ভাল পাত্রের খোঁজ পেয়েছিলাম। তাই আর ভাবিনি। তবে ভুল করছিলাম, এটা বুঝতে পেরেছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন