Higher Secondary Exam 2024

পরীক্ষা শেষে বাবার শেষকৃত্যে ছেলে

বিমল মৌপাল হাইস্কুলের ছাত্র। তাঁর পরীক্ষা কেন্দ্র পিড়াকাটা হাই স্কুল। পরীক্ষা শেষে বিমলের সঙ্গে দেখা করেছেন মৌপাল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রসূন পড়িয়া।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শালবনি শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:০৭
Share:

বৃহস্পতিবার পীড়াকাটা হাইস্কুলে বিমল মান্ডি। নিজস্ব চিত্র ।

বুধবার সন্ধ্যায় বাবার মৃত্যু হয় হাতির হানায়। তবে সে কথা সে দিন আর জানানো হয়নি ছেলেকে। কারণ, বৃহস্পতিবার ছেলের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা ছিল। এ দিন পরীক্ষা শেষে ছেলে জানল, বাবা আর নেই।

Advertisement

শালবনির মৌপালের কালীবাসায় বুধবার সন্ধ্যায় হাতির হানায় মৃত্যু হয়েছিল টুকেশ্বর মান্ডি (৫৪)-র। সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। গুরুতর জখম টুকেশ্বরকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে আনা হয়েছিল। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের জন্য দেহ পাঠানো হয়েছিল হাসপাতালের মর্গে। টুকেশ্বরের দুই ছেলে। ছোট ছেলে বিমল মান্ডি এ বারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার তাঁর স্বাস্থ্য ও শারীরশিক্ষার পরীক্ষা ছিল। বুধবার বাবার মৃত্যুসংবাদ আর ছেলেকে জানাননি পরিজনেরা। বিমল জানতেন, বাবা হাসপাতালে ভর্তি।

বিমল মৌপাল হাইস্কুলের ছাত্র। তাঁর পরীক্ষা কেন্দ্র পিড়াকাটা হাই স্কুল। পরীক্ষা শেষে বিমলের সঙ্গে দেখা করেছেন মৌপাল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রসূন পড়িয়া। প্রসূন বলেন, ‘‘ওকে মন শক্ত রেখে বাকি পরীক্ষাগুলো দিতে বলেছি।’’ বাবা আর নেই শুনে মুহূর্তে চোখ ভিজে গিয়েছিল বিমলের। প্রধান শিক্ষককে তিনি বলেছেন, ‘‘বাবা সব সময় চাইত, আমি লেখাপড়া করে বড় হই। কী ভাবে যে কী হয়ে গেল!’’ পরীক্ষা শেষে বিমল যোগ দিয়েছেন বাবার শেষকৃত্যে।

Advertisement

ঘন্টা তিনেকের ব্যবধানে হাতির হানায় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে শালবনিতে। বুধবার রাত ন’টা নাগাদ নোনাশোলে মৃতের নাম ভাস্কর কিস্কু (৩৬)। জমিতে এখন আলু রয়েছে। হাতি জমিতে নেমে গিয়েছিল। ফসল বাঁচাতে হাতি খেদাতে গিয়েছিলেন দু’জনই। হাতি পাল্টা হামলা চালায়।নিয়মানুযায়ী মৃতের পরিবার ক্ষতিপূরণ পাবে।

বন দফতর সূত্রে খবর, মেদিনীপুর বন বিভাগের অধীন এলাকায় বৃহস্পতিবার ৩২টি হাতি ছিল। চাঁদড়া রেঞ্জে ২টি, আরাবাড়ি রেঞ্জে ৩টি, পিড়াকাটা রেঞ্জে একটি, চন্দ্রকোনা রেঞ্জে ২২-২৩টি, লালগড় রেঞ্জ এলাকায় ৩টি। খাবারের খোঁজে হাতি জঙ্গল থেকে বেরোচ্ছে। জমিতে চলে আসছে। বিপত্তি বাধছে তখনই। জেলার এক বন আধিকারিকের দাবি, ‘‘হাতির গতিবিধির উপরে নজর রাখা হয়েছে। জঙ্গলে যাবেন না, সতর্ক থাকবেন— এই মর্মে এলাকায় প্রচারও করা হচ্ছে।’’ হাতিকে উত্যক্ত করবেন না— এই মর্মেও এলাকায় প্রচার হচ্ছে বলে দাবি বন দফতরের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন