মৃত মন্মথ কোলে। নিজস্ব চিত্র।
ফের হাতির হানায় মৃত্যু হল একজনের। এ বার পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতার ধাদিকা বিটের অধীনে আশনাশুলি গ্রামে। বৃহস্পতিবার সকালে হাতির সামনে পড়ে যান সাইকেল আরোহী মন্মথ কোলে (৪৭)। শুঁড় দিয়ে তুলে তাঁকে আছাড় মারে হাতিটি। ঘটনাস্থলেই মারা যান মন্মথ।
বৃহস্পতিবার সকালে গড়বেতার গিলাবনি গ্রামের বাসিন্দা পেশায় গৃহশিক্ষক মন্মথ পাশের আশনাশুলিতে পড়াতে যাচ্ছিলেন। ঘন কুয়াশায় রাস্তায় দাঁড়ানো হাতি দেখতে পাননি তিনি। পরে পালানোরও সুযোগ পাননি। মন্মথের ভাই ত্রিলোচন কোলে বলেন, ‘‘টিউশন করেই সংসার চালাত দাদা। দাদার একমাত্র ছেলে বাঁকুড়ার পাঁচমুড়া কলেজে পড়ছে। জানি না এ বার কী হবে।’’
গত কয়েকদিন ধরেই গড়বেতা ও আমলাগোড়া রেঞ্জের মাগুরাশোল, আখছড়া ,গিলাবনি ও আশনাশুলির জঙ্গলে একাধিক দলে ভাগ হয়ে রয়েছে ৬৫-৭০টি হাতি। রোজই সন্ধের পরে গ্রামের আলুখেতে নেমে তাণ্ডব চালাচ্ছে তারা। স্থানীয় বাসিন্দারা অতিষ্ঠ। গিলাবনির বাসিন্দা মিত্তন পাত্র বলেন, ‘‘কয়েকদিনে প্রায় দু’শো বিঘা জমির আলু নষ্ট করেছে হাতির দল। অথচ বন দফতরের হেলদোল নেই।’’ আসনাশুলির জঙ্গলে হাতির হামলায় মৃত্যুর ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে লাগোয়া বিষ্ণুপুরের বাঁকাদহ রেঞ্জ সংলগ্ন গ্রামগুলিতেও। স্থানীয়রা জানান, বুধবার রাতে গড়বেতা রেঞ্জের ধাদিকা বিট দিয়ে ছ’টি হাতি ঢুকে পড়ে। তাদেরই একটির হানায় প্রাণ গিয়েছে মন্মথের। বাঁকাদহের আশপাশের গ্রামগুলি থেকেও হাতি তাড়ানোর দাবি উঠেছে।
বিষ্ণুপুর পাঞ্চেত বনবিভাগের ডিএফও নীলরতন পান্ডা বলেন, ‘‘হাতির দলটিকে আটকানোর সব রকম চেষ্টা চলছে। জঙ্গল লাগোয়া গ্রামের মানুষদের সতর্ক করা হয়েছে।’’ মৃতের পরিবার নিয়মমাফিক ক্ষতিপূরণ পাবে বলে জানিয়েছেন মেদিনীপুর বন বিভাগের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা।