50 years of Sonar Kella

টায়ার ফেঁসে বিপাকে ফেলুদারা, পৌঁছলেন এসডিও

বৃহস্পতিবার জামবনি ব্লকের গিধনি এলোকেশী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ছিল আয়োজন। আয়োজক ঝাড়গ্রাম শহরের ইন্দ্রনীল ঘোষ ও তাঁর স্ত্রী স্বাতীলেখা দে ঘোষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গিধনি শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:৫৯
Share:

জামবনির গিধনির এক স্কুলে ‘সোনার কেল্লা’র প্রদর্শন। —নিজস্ব চিত্র।

মন্দার বোসের কূটকচালিতে কাচের টুকরোয় ফেলুদাদের গাড়ির চাকার টায়ার দ্বিতীয় বারের জন্য ফেঁসে গিয়েছে। আর স্টেপনি নেই। কী ভাবে নকল ডাক্তার হাজরার পিছু ধাওয়া করবে ফেলুদা! গাড়ির চালক সিংজির প্রশ্ন ‘উট পে যাওগে?’ ছবির ক্লাইম্যাক্সে থামল প্রোজেক্টর!

Advertisement

গ্রামের স্কুলে ‘সোনার কেল্লা’ ছায়াছবির ৫০ বছর পালনের আয়োজন। আমন্ত্রণ পেয়ে এসে পৌঁছেছেন ঝাড়গ্রাম সদরের মহকুমা শাসক (এসডিও) শুভ্রজিৎ গুপ্ত। সিনেমাটি নিয়ে তিনিও স্মৃতিকাতর। মহকুমাশাসকও জানালেন, সময় থাকলে ফের পড়ুয়াদের সঙ্গে বসে পুরো ছবিটি দেখতেন। পড়ুয়ারা কেমন উপভোগ করছে জানতে ছবিটি সম্পর্কে দু’একটি প্রশ্নও করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার জামবনি ব্লকের গিধনি এলোকেশী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ছিল আয়োজন। আয়োজক ঝাড়গ্রাম শহরের ইন্দ্রনীল ঘোষ ও তাঁর স্ত্রী স্বাতীলেখা দে ঘোষ। দম্পতি করোনা কালে তাঁদের বাবাদের হারিয়েছেন। ইন্দ্রনীলের বাবা তাপস ঘোষ ও স্বাতীলেখার বাবা স্বরূপ দে-র স্মৃতিতে তৈরি হয়েছে ‘স্বরূপ-তাপস মোশন’ নামে সংস্থা। উদ্দেশ্য, গ্রামীণ এলাকার স্কুল পড়ুয়াদের বিনামূল্যে ছোটদের ক্লাসিক ছবি দেখানো। এ জন্য প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক অনুমতি নিয়েছেন দম্পতি।

Advertisement

এদিন দুপুরে স্কুলের হলঘরে প্রোজেক্টরে ‘সোনার কেল্লা’ দেখানো শুরু হয়। ছবির শেষ পর্বে এসে পৌঁছন মহকুমাশাসক। তিনি বলেন, ‘‘দারুণ উদ্যোগ করেছেন ইন্দ্রনীল ও স্বাতীলেখা। এ ধরনের উদ্যোগের ফলে প্রান্তিক এলাকার পড়ুয়ারা ক্ল্যাসিক ছবি দেখার সুযোগ পাবে।’’ পড়ুয়াদের উদ্দেশ্যে মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘সোনার কেল্লা বাঙালির আবেগ। এই ছবিটি কালের সীমানা অতিক্রম করেছে। আজ তোমরা দেখছ, ২৫ বছর পরও এই ছবি তোমাদের ভাল লাগবে। সাধারণত গ্রামীণ এলাকায় এ ধরনের ছবি দেখার সুযোগ হয় না। এমন উদ্যোগের কথা জেনে কিছু সময়ের জন্য এসেছি।’’

মহকুমাশাসকের কাছে পড়ুয়ারা ডব্লিউবিসিএস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চান। তিনি জানান, প্রশাসনিক চাকরির পরীক্ষা খুব কঠিন নয়। প্রশাসক হতে চাইলে এখন থেকেই মানসিক প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন। এ জন্য এমএ, এমএসসি ডিগ্রির প্রয়োজন নেই। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় মাধ্যমিক স্তরের বিষয় থাকে। মূল পরীক্ষায় স্নাতক স্তরের বিষয়গুলো কাজে লাগে। ইন্টারভিউয়ে দেখে নেওয়া হয় পরীক্ষার্থীর বাস্তব জ্ঞান কতখানি। বিভিন্ন অনভিপ্রেত পরিস্থিতিতে কী ভাবে পদক্ষেপ করবেন ভবিষ্যতের প্রশাসকেরা সেটাও দেখা হয়। মাধ্যমিক ও স্নাতক স্তরে ভাল ভাবে পড়াশোনা করলে এই পরীক্ষায় সফল হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। তবে অঙ্ক ও ইংরেজিও ভাল ভাবে জানতে হবে। জানান, পরীক্ষায় সাফল্যের জন্য সর্বোপরি আত্মবিশ্বাসের প্রয়োজন।

এদিন পড়ুয়াদের আবদারে তাঁদের সঙ্গে ছবিও তোলেন মহকুমাশাসক। তিনি চলে যাওয়ার পর সিনেমার বাকি অংশ দেখানো হয়। শেষে ছিল ছবির বিষয় ভিত্তিক ক্যুইজ়। অষ্টম শ্রেণির অনির্বাণ মাহাতো ও দশম শ্রেণির সোহিনী দাসের মতো কয়েকজন পুরস্কার জিতে নেয়। প্রধান শিক্ষিকা দেবলীনা দাশগুপ্ত বলছেন, ‘‘গত বছর স্কুলের ৭৫ বর্ষ পূর্তি হয়েছে। ইন্দ্রনীল ও স্বাতীলেখার এমন উদ্যোগে সোনার কেল্লা ছবি প্রদর্শন আমাদের কাছে বাড়তি পাওনা।’’ এদিন প্রদর্শনের আগে সত্যজিৎ রায় ও ‘সোনার কেল্লা’ সম্পর্কে বলেন দেবলীনা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন