Iron Man

অরণ্যশহরের ভূমিপুত্রের ‘আয়রন ম্যান’ খেতাব

ভিয়েতনামের সমুদ্রে সাঁতার কেটে, সাইকেল চালিয়ে ও দৌড়ে বিশেষ ‘আয়রন ম্যান’ প্রতিযোগিতায় সফল হলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার এক উদ্যোগপতি। প্রতিযোগিতাটি শেষ করেছেন ছ’ঘণ্টা ৫৯ মিনিট ২৫ সেকেন্ডে।

Advertisement

কিংশুক গুপ্ত

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২৩ ০৮:১৭
Share:

‘আয়রন ম্যান’ সঞ্জয়কুমার পাটোয়ারী। নিজস্ব চিত্র।

তাঁর শিল্প সংস্থায় তৈরি হয় লোহার রড-সহ নানা ইস্পাত সামগ্রী। আর এ বার তিনি নিজেই জিতলেন ‘আয়রন ম্যান’ খেতাব!

Advertisement

ব্যাপারটা আসলে কী? আদতে ভিয়েতনামের সমুদ্রে সাঁতার কেটে, সাইকেল চালিয়ে ও দৌড়ে বিশেষ ‘আয়রন ম্যান’ প্রতিযোগিতায় সফল হলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার এক উদ্যোগপতি। পুরো প্রতিযোগিতাটি তিনি শেষ করেছেন ছ’ঘণ্টা ৫৯ মিনিট ২৫ সেকেন্ডে।

গত ৭ মে ভিয়েতনামের ডানাং শহরে ওই প্রতিযোগিতায় সফল হওয়ার পর আইসল্যান্ড-সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে শরীর চর্চার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রচার করতে গিয়েছেন বছর চুয়াল্লিশের সঞ্জয়কুমার পাটোয়ারি। সঞ্জয় ঝাড়গ্রামের ভূমিপুত্র। তবে এখন খড়্গপুর শহরের বাসিন্দা। খড়্গপুর গ্রামীণের গোকুলপুরে একটি শিল্প সংস্থার অধিকর্তা হলেন সঞ্জয়। এ ছাড়াও ওই শিল্প গোষ্ঠীর কর্ণধারও তিনি। ছোটবেলা থেকে শরীর চর্চার প্রতি বিশেষ আগ্রহ ছিল সঞ্জয়ের। এখন ব্যবসায়িক ব্যস্ত জীবনেও তিনি নিয়মিত শরীর চর্চা করেন। প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় ‘আয়রন ম্যান’ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এই প্রতিযোগিতার নিয়ম হল প্রতিযোগীকে প্রথমে ১.৯ কিলোমিটার সমুদ্রে সাঁতার কাটতে হয়। সাঁতার শেষ করার পরেই সাইকেলে চড়ে ৯০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে হয়। সাইকেল পর্ব শেষ হওয়ার পর প্রতিযোগীকে ২১.১ কিলোমিটার দৌড়ে লক্ষ্যে পৌঁছতে হয়।

Advertisement

সকলে এই প্রতিযোগিতা সম্পূর্ণ করতে পারেন না। অনেকেই অজ্ঞান হয়ে যান কিংবা অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ বার ভিয়েতনামে সঞ্জয়ের সঙ্গী ছিলেন ঝাড়গ্রাম শহরের বাসিন্দা ভাস্কর চৌধুরী। ভাস্কর গোকুলপুরে সঞ্জয়ের সংস্থার কর্মী। ভাস্কর জানাচ্ছেন, ভিয়েতনামে ডানাং শহরে প্রতিযোগিতার দিন তাপমাত্রা ছিল ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিভিন্ন দেশের তিন হাজার প্রতিযোগীর মধ্যে ভারতের ছিলেন ১০ জন। ভাস্কর বলছেন, ‘‘প্রতিযোগিতার দিন ১৫টি অ্যাম্বুল্যান্স উপস্থিত ছিল। ৪৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় অনেক প্রতিযোগী অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।’’ জানা গেল, আট ঘণ্টার মধ্যে পুরো প্রতিযোগিতাটি শেষ করতে হয়। প্রতিযোগিতার দিন সকাল সাড়ে পাঁচটায় সঞ্জয় প্রথমে দক্ষিণ এশিয়া সাগরে সাঁতার কাটেন। সমুদ্রে ১.৯ কিলোমিটার সাঁতারাতে তাঁর সময় লাগে ৫৩ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড। এরপরই ভিজে গায়েই সাইকেলে চড়ে ডানাং শহরের তিনটি ফ্লাইওভার-সহ শহরের ৯০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন ৩ ঘণ্টা ১২ মিনিট ২৩ সেকেন্ডে। এরপর সাইকেল রেখেই দু’ঘণ্টা ৪১ মিনিট ১১ সেকেন্ডে তিনি ২১.১ কিমি পথ দৌড়ে লক্ষ্যে পৌঁছন।

তিন হাজার প্রতিযোগীর মধ্যে ১৩৯৯ জন প্রতিযোগিতা সম্পূর্ণ করতে পেরেছিলেন। এঁরা সকলেই ‘আয়রন ম্যান’ খেতাব পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সঞ্জয়ের স্থান ৭৮৪তম। দশজন ভারতীয়ের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন সঞ্জয়। আইসল্যান্ডের রেক্রেভিক শহর থেকে হোয়াটসঅ্যাপ কলে সঞ্জয় বলছিলেন, ‘‘দু’বছর আগে বাঁ-পায়ে লিগামেন্টের অস্ত্রোপচার করিয়েছি। তাতেও দমে যাইনি। শরীর চর্চার কোনও বিকল্প নেই। তবে অ্যাডভেঞ্চার ভালবাসি বলেই সাহস করে প্রতিযোগিতায় নাম দিয়েছিলাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন