জোটে না মই, আঁধারেই উড়ালপুল

যদিও পুরসভার সাফাই, আলোর সমস্যার কথা তাদের অজানা নয়। কিন্তু তাদের হাতে উঁচু সিঁড়ি (ল্যাডার) নেই। যা এই কাজে লাগানো হয়। তাই আলোগুলিও সারানো যাচ্ছে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৭ ০১:১৬
Share:

আঁধারে: আলো নেই, তাই ভরসা গাড়ির হেডলাইটই। নিজস্ব চিত্র

বাতিস্তম্ভ রয়েছে। তাতে আলোও লাগানো। কিন্তু তা না জ্বলায় দিনের পর দিন আধো-অন্ধকারের উড়ালপুলে যাতায়াত করতে হচ্ছে পথচারীদের। একই অবস্থা যানচালকদেরও।

Advertisement

উড়ালপুলে রয়েছে ৩৫টি বাতিস্তম্ভ। অথচ দেখভালের অভাবে এর বেশিরভাগই জ্বলে না বলে অভিযোগ শহরবাসীর। রাতে যাতায়াত করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন সাইকেল-বাইক আরোহী ও পথচারীরা। ছোটখাটো দুর্ঘটনাও লেগে রয়েছে। শহরবাসীর অভিযোগ, ঝাড়গ্রাম শহরে গুরুত্বপূর্ণ এই উড়ালপুলে যানবাহনের চাপ যথেষ্ট। অথচ সেখানে উড়ালপুলে সন্ধের পর যান চলাচল তো বটেই চলাফেরাও সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে আলো না থাকায়। দীর্ঘদিন ধরে এ ভাবে চললেও এ সব দেখভালের দায়িত্ব যাদের সেই পুরসভার কোনও হেলদোলই নেই।

যদিও পুরসভার সাফাই, আলোর সমস্যার কথা তাদের অজানা নয়। কিন্তু তাদের হাতে উঁচু সিঁড়ি (ল্যাডার) নেই। যা এই কাজে লাগানো হয়। তাই আলোগুলিও সারানো যাচ্ছে না।

Advertisement

ঝাড়গ্রাম শহরের মাঝবরাবর নতুনডিহিতে রয়েছে দক্ষিণ পূর্ব রেলের খড়্গপুর-টাটানগর রেলপথ। শহরের মূল রাস্তায় লেভেল ক্রসিংয়ের জন্য আগে যানজট হতো। সমস্যা মেটাতে নতুনডিহি লেভেল ক্রসিংয়ে উড়ালপুল তৈরির পরিকল্পনা হয়। ২০১১-র অগস্টে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। এর জন্য রেল ও রাজ্য সরকার মোট ১২ কোটি টাকা বরাদ্দ করে। কাজ শেষ হয় ২০১৫-র সেপ্টেম্বরে। তখন থেকেই উড়ালপুলটিতে যান চলাচল শুরু হয়ে যায়। রেলের তরফেই উড়ালপুলে আলোর ব্যবস্থা করা হয়। পরে উড়ালপথের আলোর দায়িত্ব পায় পুরসভা। অরণ্যশহরের উত্তর ও দক্ষিণ অংশের সংযোগকারী মূল রাস্তাটি উড়ালুলের উপর দিয়ে গিয়েছে। এই রাস্তাটিই বাঁকুড়া-দুর্গাপুর গামী ৫ নম্বর রাজ্যসড়ক। বাঁকুড়া-দুর্গাপুরের পাশাপাশি, বেলপাহাড়ি, পুরুলিয়া ও ঝাড়খণ্ডেও যাওয়া যায়। উড়ালপুলের দক্ষিণপ্রান্ত লোধাশুলিতে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে (মুম্বই রোড) মিশেছে। ফলে সব সময়ই ব্যস্ত থাকে এই রাস্তা।

উড়ালপুলের দু’প্রান্তেই রয়েছে ঘন জনবসতি। ফলে দিনে-রাতে উড়ালপুল দিয়ে স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী-সহ বহু নিত্যযাত্রী যাতায়াত করেন। কিন্তু রাতে উড়ালপুলে আলো না জ্বলায় সমস্যায় পড়েন সকলেই। শহরের প্রবীণ বাসিন্দা শিরিষ বেরা বলেন, “কয়েকদিন আগে অন্ধকারে পথ চলতে গিয়ে পড়ে গিয়ে জখম হয়েছিলাম।”শহরের এক কোচিং সেন্টারের শিক্ষক বিশ্বজিৎ কর্মকার বলেন, “আলো না জ্বলায় রাতে উড়ালপুলে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। বিশেষত মহিলাদের ক্ষেত্রে। বহু ছাত্রছাত্রীই রাতে উড়ালপুল দিয়ে যাতায়াতে ভয় পাচ্ছেন।’’

ঝাড়গ্রাম পুরসভার বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুরপিতা সুকুমার শিটের যুক্তি, ‘‘অত উঁচু বাতিস্তম্ভের নাগাল পাওয়ার মতো উঁচু সিঁড়ি আমাদের নেই। সাধারণ সিঁড়ি দিয়ে কাজ করতে কর্মীরা ভয় পাচ্ছেন।” ঝাড়গ্রাম পুরসভার ভাইস চেয়ারপার্সন শিউলি সিংহ বলেন, “ঝাড়গ্রাম জেলা হলেও পুরসভা এখনও ‘ডি’ ক্যাটাগরি ভুক্ত। ল্যাডার কেনার জন্য পুরবোর্ডে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন