অ্যাসিড বিক্রিতে লাগাম টানতে শিবির প্রশাসনের

সরকারি নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই দেদার বিকোচ্ছিল অ্যাসিড। আনন্দবাজার পত্রিকায় বেআইনি ভাবে অ্যাসিড বিক্রি ছবি-সহ প্রতিবেদনের পরই টনক নড়েছে পুলিশের।

Advertisement

অভিজিৎ চক্রবর্তী

ঘাটাল শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৬ ০৭:১১
Share:

চলছে তল্লাশি।— নিজস্ব চিত্র।

সরকারি নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই দেদার বিকোচ্ছিল অ্যাসিড। আনন্দবাজার পত্রিকায় বেআইনি ভাবে অ্যাসিড বিক্রি ছবি-সহ প্রতিবেদনের পরই টনক নড়েছে পুলিশের।

Advertisement

বৃহস্পতিবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ দাসপুরের সাগরপুর-সহ একাধিক অ্যাসিড দোকানে হানা দেয়। দোকানে অ্যাসিড না পেলেও সংশ্লিষ্ট দোকান মালিকদের সতর্ক করার পাশাপাশি নাম ও ঠিকানা সংগ্রহও করা হয়েছে। ঘাটালের মহকুমাশাসক পিনাকীরঞ্জন প্রধান বলেন, “মাঝে মধ্যেই এরকম অভিযান চালানো হবে। এ দিন কোনও দোকানে অ্যাসিড মেলেনি। আমরাও ক্রেতা সেজে দোকানে যাব। অ্যাসিড হাতে এলেই দোকান মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।”

ঘাটাল মহকুমায় বহু সোনার দোকান রয়েছে। বিশেষ করে দাসপুরেই ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় আটশোর বেশি সোনার দোকান রয়েছে। সব দোকানে কমবেশি অ্যাসিড ব্যবহার হয়। সরকারি তথ্য বলছে, অ্যাসিড সরবরাহের জন্য গোটা মহকুমায় ৮০ টি হার্ডওয়ারের দোকান রয়েছে। বেসরকারি মতে এই সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। জানা গিয়েছে, স্থানীয় পঞ্চায়েত এবং পুরসভার থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে চলছে এই কারবার। কিন্তু অ্যাসিড বিক্রির জন্য প্রয়োজনীয় লাইসেন্স কোনও দোকানেই নেই। মানা হয়না আদালতের নির্দেশও।

Advertisement

গত সপ্তাহে দাসপুরে এক কলেজ ছাত্রীর উপর অ্যাসিড হামলার ঘটনার পর অ্যাসিড বিক্রি নিয়ে আনন্দবাজারে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশের পরই সতর্ক হন ব্যবসায়ীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাগরপুরের এক হার্ডওয়ারের মালিক বলেন, “আনন্দবাজারে খবর দেখেই আমরা গোডাউন থেকে সমস্ত অ্যাসিড ভর্তি বোতল ফাঁকা জায়গায় সরিয়ে দিয়েছি। পুলিশ মামলা করার হুমকি দিয়েছে। লাইসেন্স ছাড়া আর অ্যাসিড বিক্রি করব না।’’ সাগরপুরে ব্যবসায়ী ক্ষুদিরাম রানা, দীপঙ্কর লালেরা বলেন, “আমরা আগে অ্যাসিড বিক্রি করতাম। এখন ব্যবসা বন্ধ করেই দিয়েছি। এবার লাইসেন্স নিয়েই মাথা উঁচু করেই ব্যবসা করব।” সাগরপুর পল্লি উন্নয়ন সমিতির সম্পাদক বলরাম হাইতের কথায়, ‘‘আমরাও সংগঠন ভাবে সংশ্লিষ্ট সমস্ত সদস্যদের লাইসেন্স করার জন্য বলেছি।’’

তবে বেআইনিভাবে পুরোপুরি অ্যাসিড বিক্রি বন্ধ হয়নি, সে কথা মানছেন ঘাটালের মহকুমাশাসক পিনাকীরঞ্জন প্রধানও। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা সাগরপুর, ঘাটাল, দাসপুর শহর-সহ মোট দশটি জায়গায় সচেতনতা শিবির করব। অ্যাসিড বিক্রির নিয়মাবলিও জানানো হবে। কোথায় আবেদন করলে এবং কী কী কাগজ প্রয়োজন সমস্ত তথ্যই বলা হবে। ইচ্ছুক ব্যবসায়ীরা সাহায্য চাইলে প্রশাসন পাশে থাকবে। লাইসেন্স ছাড়া অ্যাসিড বিক্রি পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হবে।যথেচ্ছ ভাবে অ্যাসিড বিক্রি বন্ধের জন্যই এই উদ্যোগ।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন