উদ্বোধন: বেলদা গঙ্গাধর অ্যাকাডেমি স্কুলের অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
শিক্ষাব্যবস্থার মানোন্নয়নে প্রত্যন্ত গ্রামের স্কুলগুলিতেও উন্নত তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করার বার্তা দিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বুধবার বেলদা গঙ্গাধর অ্যাকাডেমির শতবর্ষ পূর্তির অনুষ্ঠানে পার্থবাবু বলেন, ‘‘আমরা স্কুলে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করার চেষ্টা করছি যাতে বিশিষ্ট মানুষদের কথাও সুদূর গ্রামের স্কুলে বসেও শোনা যায়।’’
১৯১৯ সালের ২ জানুয়ারি পথচলা শুরু বেলদা গঙ্গাধর অ্যাকাডেমির। এলাকার পাশাপাশি এই স্কুলে পড়াশোনা করে ওডিশার ছাত্ররাও। গত মঙ্গলবার স্কুলের তিনদিন ব্যাপী শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠানের সূচনার দিনে উপস্থিত ছিলেন সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। ১৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে তৈরি স্কুলের একটি গ্রন্থাগারের উদ্বোধন হয়। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিন বুধবার আয়োজন হয় প্রাক্তনী পূনর্মিলন উৎসবের। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী।
মঞ্চ থেকে এ দিন বারবার স্কুলের পরিবেশের প্রশংসা করেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, “কোনও প্রতিষ্ঠান বড় হতে পারে না, যদি সেই প্রতিষ্ঠানের পিছনে সার্থকতা, সফলতা না থাকে। তাই শুধু বই পড়া নয়, ছাত্রদের সামাজিক দায়বদ্ধতাও থাকতে হবে।’’ তাঁর কথায়, “একশো, দেড়শো, দু’শো বছর পূর্ণ করেছে এমন স্কুলের তালিকা তৈরি করার জন্য শিক্ষা দফতরকে বলেছি। এ বিষয়ে আমাদের জানা দরকার।” একইসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর সংযোজন, “আমরা সবসময় ভাবি বেসরকারি স্কুলে গিয়ে একটু ইংরেজি বললাম আর একটু টাই পড়লাম তাতেই হল। কিন্তু আমরা দেখাতে পারি যখন এই ধরনের ব্যবস্থা ছিল না তখন এই স্কুলগুলি মাথা উঁচু করে কীভাবে লড়াই করে প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ দিয়েছে।”
বিংশ শতকের গোড়ায় পূর্ব মেদিনীপুরের মুগবেড়িয়ার জমিদার রায়সাহেব গঙ্গাধর নন্দ ওডিশার প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদায় জমিদারি বিস্তার করেন। গড়ে তুলেছিলেন পান্থনিবাস, স্নানাগার। তৈরি করেন একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ও। ওই স্কুলের নাম দিয়েছিলেন ‘বেলদা গঙ্গাধর অ্যাকাডেমি’। একশো বছরের পুরনো স্কুলকে হেরিটেজ ঘোষণার দাবিও রয়েছে। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থবাবু বলেন, “আগের জমানায় খুব তাড়াতাড়ি হেরিটেজ ঘোষণা হত। আগে ভাবা হত চলো এখানে আমরা আছি, আমাদের রাজনৈতিক দলের নেতারা আছেন তাই এটা হেরিটেজ বানিয়ে দাও। কিন্তু আমাদের একটি হেরিটেজ কমিশন রয়েছে। সেটি আমার দফতরের অধীনে হলেও মুখ্যমন্ত্রী দেখেন। আপনারা লিখিতভাবে আবেদন করলে আমি মুখ্যমন্ত্রীকে জানাব।” অনুষ্ঠানে পার্থবাবু ছাড়াও ছিলেন বিশিষ্ট নাট্য ব্যক্তিত্ব মনোজ মিত্র, সাহিত্যিক ভগীরথ মিশ্র প্রমুখ।