পঞ্চায়েত কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে প্রতিবাদ। নিজস্ব চিত্র
টাকা বকেয়া রাখার অভিযোগে পঞ্চায়েত অফিসে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন ঠিকাদাররা। সোমবার রামনগর-২ ব্লকের কালিন্দী গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। বিক্ষোভের জেরে কার্যালয়ে ঢুকতে না পেরে বাইরে বসেই কাজ সারলেন মহিলা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান।
প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা বকেয়া থাকার অভিযোগে এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ কালিন্দী গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের সামনের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন পঞ্চায়েতের নথিভুক্ত প্রায় ১২ জন ঠিকাদার। বন্ধ গেটের সামনে চেয়ার ফেলে বসে পড়েন তাঁরা। চলে বিক্ষোভ। সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ পঞ্চায়েত প্রধান তসলিমা বিবি দফতরে আসেন। বিক্ষোভের জেরেও কার্যালয়ে ঢুকতে পারেননি তিনিও। বিক্ষোভকারী ঠিকাদারদের দফতরের তালা খুলে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন প্রধান। তবে ক্ষুব্ধ ঠিকাদাররা জানিয়ে দেন, সুবিচার না পেলে প্রয়োজনে দু’দিন এই বিক্ষোভ চলবে। এরপরে প্রধান তসলিমা বিবি বিষয়টি বিডিও প্রীতম সাহাকে জানান। পঞ্চায়েতে আসা গ্রামবাসীদের পরিষেবা দেওয়ার জন্য দফতরের বাইরেই কাজ শুরু করেন তসলিমা বিবি।
ক্ষুব্ধ ঠিকাদার নন্দকিশোর দাসের অভিযোগ, ২০১৪ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত বিভিন্ন আর্থিক বছরে একশো দিনের প্রকল্প, ঢালাই রাস্তা তৈরি, কালভার্ট তৈরি-সহ নানা প্রকল্পের টাকা পাননি তাঁরা। এ ভাবে চলবে কী করে?’’ একইভাবে, আর এক ঠিকাদার, মানস সেনাপতিও অভিযোগ করছেন, তাঁরা খবর পেয়েছেন, অন্য গ্রাম পঞ্চায়েত ঠিকাদারদের টাকা দিচ্ছে। তবে কালিন্দী গ্রাম পঞ্চায়েত টাকা দিতে পারছে না। ‘‘কেউ সুদে টাকা এনে, কেউ বাড়ির গয়না বেঁচে কোনওরকমে কাজ করেছি। টাকা না পেলে আমাদের রাস্তায় বসতে হবে’’, বলছেন তপন গুছাইত, রঞ্জন জানার মতো ঠিকাদাররাও।
সমস্যার কথা মানছেন প্রধান তসলিমা বিবিও। তিনি বলছেন, ‘‘এখন ‘অনলাইনে’ পেমেন্ট দেওয়া হয়। ইন্টারনেটে কিছু অসুবিধার জন্য আমাদের এখন টাকা পেতে অসুবিধা হচ্ছে। বিষয়টি জেলাশাসককে জানিয়েছি।’’
এ বিষয়ে বিডিও প্রীতমবাবু বলেন, ‘‘প্রযুক্তিগত কিছু অসুবিধার জন্য এই গ্রাম পঞ্চায়েতের টাকা পেতে অসুবিধা হচ্ছে। ব্লকের অন্য গ্রাম পঞ্চায়েতেরও অনেক টাকা বকেয়া রয়েছে। শীঘ্রই এই সমস্যা সমাধানের জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’