কালুয়ার বাড়ির সামনেই পড়ে রয়েছে পোড়া বাইক। নিজস্ব চিত্র।
লাইসেন্স নেই। বেআইনি ভাবেই চলছে হেরোইন, গাঁজার কারবার। পুলিশ-প্রশাসনকে বারবার বলেও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার সকালে তাই উত্তেজিত একাংশ স্থানীয় বাসিন্দা আগুন লাগিয়ে দিল মাদকদ্রব্য বিক্রেতার দুটি মোটর বাইকে। বেআইনি কারবারে অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি ও তার পরিজনদের পুলিশ এসে সরিয়ে নিয়ে গেলে এলাকাবাসী তার বাড়িতে তালাও লাগিয়ে দেয়।
এ দিন এই জনরোষের সাক্ষী রইল মেদিনীপুর পুসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের পালবাড়ি। স্থানীয়দের অভিযোগ, গত চার-পাঁচ বছর ধরে মৃণাল দেব ওরফে কালুয়া বেআইনই মাদকের কারবার চালাচ্ছে। দিনভর সাইকেল, মোটর সাইকেল ও গাড়িতে চেপে লোকজন এসে মাদকদ্রব্য কিনে নিয়ে যায়। কালুয়াকে বলেও কোনও লাভ হয়নি। শেষে গত ডিসেম্বরে এলাকাবাসী মাদকদ্রব্য কিনতে আসা লোকজনকে আটকে রাখে। পুলিশ তখন কালুয়া ও পরিবারের লোকেদের গ্রেফতারও করেছিল। আদালতে নির্দেশে কালুয়া ও তার বাবার জেল হেফাজত হয়। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, বাবা-ছেলে জেলে থাকাকালীন কালুয়ার মা ও স্ত্রী বেআইনি কারবার চালিয়েছে।
গত সপ্তাহে কালুয়া জামিন পেয়ে বাড়ি ফিরে আসে এবং ফের মাদকদ্রব্য বিক্রি শুরু করে বলে অভিযোগ। এলাকাবাসীর আরও অভিযোগ, বৃহস্পতিবার সকালে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা একজনকে মোটরবাইক নিয়ে ধাক্কা মারে কালুয়া। তখনই ক্ষিপ্ত এলাকাবাসী কালুয়ার বাইকে আগুন ধরিয়ে দেয়। স্থানীয় কাউন্সিলার সৌমেন খান বলেন, ‘‘কালুয়াকে অনেকবার মাদকদ্রব্য বিক্রি করতে নিষেধ করা হয়েছে। এলাকাবাসীর কথা না শুনলে ওকে আর এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হবে না।’’
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কালুয়ার নামে থানায় ফের অভিযোগ জানিয়েছে এলাকাবাসী। পুলিশ জানিয়েছে, গত ডিসেম্বরের ঘটনার পর থেকে এলাকায় সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করা হয়েছে। যদিও স্থানীয় ভারতী মান্নার অভিযোগ, ‘‘মাদকদ্রব্য কেনাবেচা চলছেই। সিভিকরা ভলান্টিয়ার তো মোবাইলেই ডুবে থাকে।’’ ঘটনায় আবগারি দফতরের নজর নেই বলেও স্থানীয় বাসিন্দা সুমিতা সামন্তের অভিযোগ। যদিও আবগারি দফতরের জেলা আধিকারিক সুব্রত দাশগুপ্ত অবশ্য বলেন, ‘‘বেআইনি ভাবে মাদকদ্রব্য বিক্রি বন্ধে অভিযান চলছে। এলাকাবাসীর সহযোগিতা পেলে এই অভিযান আরও কার্যকার করা যাবে।’’