সরকারি গম  বাইরে ‘বিক্রি’, তৃণমূল প্রধান অভিযুক্ত

পঞ্চায়েত সূত্রের খবর, গত ২৮ ডিসেম্বর পঞ্চায়েতের সাধারন বৈঠকে অবশিষ্ট গমের কথা জানতে চান শাসক দলের এক পঞ্চায়েত সদস্য। অভিযোগ, তখনই সামনে গম বিক্রির কথা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মহিষাদল শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:১৫
Share:

সরকারি প্রকল্পে বিলি করার গম কাউকে না জানিয়ে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট এলাকার বিডিও, মহকুমাশাসক এবং পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসকের কাছে লিখিত ভাবে অভিযোগ জানিয়েছেন শাসকদলেরই এক পঞ্চায়েত সদস্য।

Advertisement

স্থানীয় এবং পঞ্চায়েত সূত্রের খবর, মহিষাদলের ইটামগরা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতে রাজ্য সরকারের তরফে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ২৬ কুইন্ট্যাল গম দেওয়া হয়েছিল। দুঃস্থদের মধ্যে তা বিলি করার কথা ছিল। সেই মতো ভোটের আগে ১৮ কুইন্ট্যাল গম বিলি করা হয়ে গিয়েছিল স্থানীয়দের মধ্যে। ভোট চলে আসায় বিলির কাজ বন্ধ ছিল বলে খবর। এখন অভিযোগ উঠেছে, কাউকে না জানিয়ে বাকি আট কুইন্ট্যাল চাল মাত্র ৮০০ টাকার বিক্রি করেছেন পঞ্চায়েত প্রধান।

পঞ্চায়েত সূত্রের খবর, গত ২৮ ডিসেম্বর পঞ্চায়েতের সাধারন বৈঠকে অবশিষ্ট গমের কথা জানতে চান শাসক দলের এক পঞ্চায়েত সদস্য। অভিযোগ, তখনই সামনে গম বিক্রির কথা। বিক্রির অর্থ পঞ্চায়েতের আয়ের খাতায় দেখানো হয়নি বলেও অভিযোগ। স্থানীয় পঞ্চায়েতের সদস্য তথা প্রাক্তন উপপ্রধান মুসলেমা বেগম বলেন, ‘‘সাধারণ সভায় গমের হিসাব জানতে চেয়েছিলাম। তার তথ্য দিতে পারেনি। শুধু বলা হয়েছে, ওই গম বিক্রি করা হয়েছে। বিক্রীর অর্থ সরকারি খাতায় হিসাব রাখা হয়নি। এই আর্থিক দুর্নীতির তদন্ত চেয়ে বিডিও-সহ জেলা এবং মহকুমাশাসককে অভিযোগ জানিয়েছি।’’

Advertisement

প্রসঙ্গত, ১২ আসন বিশিষ্ট ইটামগরা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতে শাসক দল তৃণমূল পেয়েছিল ১১টি আসন। একটি পেয়েছিল বিজেপি। প্রধান হিসাবে শাসক দলেরই মুসলেমা বেগম এবং বর্তমান প্রধান শম্পা কাঁপের মধ্যে ভোটাভুটি হয়। তাতে হেরে যান মুসলেমা। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের মতে, তার পর থেকেই এলাকায় শাসকদলের মধ্যে গোষ্ঠী কোন্দল শুরু হয়ে যায়।

সম্প্রতি গম বিক্রি সংক্রান্ত অভিযোগ প্রসঙ্গে পঞ্চায়েতের যুক্তি, ওই গম পোকা লেগে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তাই বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ তরুণ মণ্ডল বলেন, ‘‘বিদায়ী বোর্ডের আমলে যে গম পাওয়া গিয়েছিল, তা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সকলের অনুমতি নিয়েই বিক্রি করা হয়েছে বলে জানি। বাকি আর কিছু বলতে পারব না।’’

আর সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান শম্পা কাঁপ। তাঁর কথায়, ‘‘সবই মিথ্যা অভিযোগ। এ নিয়ে ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে তবেই মতামত জানাব।’’ এ প্রসঙ্গে জানতে চেয়ে মহিষাদলের বিডিও জয়ন্তকুমার দে’কে ফোন করা হয়েছিল। তবে তিনি মোবাইল ধরেননি। হলদিয়ার মহকুমাশাসক কুহক ভূষণ বলেন, ‘‘লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে বলে এখনও জানি না। আগামীকাল দফতরের গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন