যুব তৃণমূল লেখা এই বিল দিয়েই তোলা হচ্ছে চাঁদা। নিজস্ব চিত্র
উপলক্ষ্য রামনবমীর পুজো ও মহামিছিল। তাই রসিদ ছাপিয়ে ব্যবসায়ীদের থেকে টাকা তোলার অভিযোগ উঠল জামবনিতে। অভিযোগের তির যুব তৃণমূলের দিকে।
জামবনির সদর গিধনি এলাকায় বেশ কিছু ব্যবসায়ীর কাছ থেকে এ ভাবে টাকা তোলা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গিধনি এলাকায় যুব তৃণমূলের কিছু কর্মী ‘টিএমওয়াইসি’ (তৃণমূল ইয়ুথ কংগ্রেস) ছাপানো রসিদে টাকা তুলছেন বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। ব্যবসায়ীরাও ঝুটঝামেলার আশঙ্কায় নির্বিবাদে চাহিদামতো টাকা দিতে বাধ্য হচ্ছেন। গিধনির এক পান গুমটির মালিকেরও অভিযোগ, “সামান্য দোকান চালাই। কিন্তু শাস দলের ছেলেরা একশো টাকা রামনবমীর চাঁদা নিয়ে গিয়েছে । ভয়ে টাকা দিতে হয়েছে।” এ ভাবে টাকা তোলা নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
দলের তরফেও এমন নির্দেশ দেওয়া হয়নি। তারপরও কীভাবে যুব তৃণমূলের নাম ব্যবহার করে টাকা তোলা হচ্ছে, সেই প্রশ্ন উঠেছে শাসকদলের ভিতরেই। জবাবও মিলেছে দলের একাংশের তরফে। ঝাড়গ্রাম জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি দেবনাথ হাঁসদার বাড়ি জামবনি ব্লক এলাকায়। দেবনাথবাবুর কিছু অনুগামী রামনবমীর পুজো ও মিছিলের নাম করে টাকা তুলছেন বলে অভিযোগ। জানা গিয়েছে, যুব তুণমূলের গিধনি অঞ্চল কমিটির উদ্যোগে গিধনি বাজারে রবিবার রাম নবমী উপলক্ষে মিছিল ও পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। সেই অনুষ্ঠানের জন্য স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা তোলা হচ্ছে।
গিধনি অঞ্চল যুব তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি রাজু মাণ্ডি অবশ্য টাকা তোলা নিয়ে দোষের কিছু দেখছেন না। তিনি বলেন, “রাম নবমীর দিন স্থানীয় যুব তৃণমূলের কার্যালয়ে রামের পুজো হবে। বাইক নিয়ে মহা মিছিল হবে। র্যালিতে কয়েকশো বাইক থাকবে। এ সবের খরচ রয়েছে। এ জন্য স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য চাওয়া হচ্ছে। যে যেমন পারছেন সাহায্য করছেন। আমরা কাউকেই জোর করছি না।”
ঝাড়গ্রাম জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি দেবনাথ হাঁসদারও দাবি, “চাঁদা মোটেই তোলা হচ্ছে না। এ রকম হওয়ার কথাও নয়। দলের তহবিল থেকেই রামনবমীর কর্মসূচি হচ্ছে। রবিবার রামনবমীর দিনে গোটা ব্লক জুড়ে হাজার-বারোশো মোটরবাইক নিয়ে বাইকের মহামিছিল হবে।”
ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “দলের উদ্যোগে কোনও পুজো হবে না। ব্যক্তিগত উদ্যোগে কেউ পুজো করতে পারে। দলীয় কর্মীরা পুজোয় যোগ দিতে পারেন। তবে দলের উদ্যোগে পুজো হবে না। রামনবমী উত্সব উপলক্ষে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বিভিন্ন এলাকায় শোভাযাত্রা, বাইক র্যালি, পদযাত্রা হবে।” দলের বা দলীয় সংগঠনের নাম ব্যবহার করে কোনও রসিদ ছাপানো যাবে না বলেও জানিয়েছেন অজিতবাবু। তিনি বলেন, “অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।”