TMC

Bangla Awas Yojona: ঘর তৈরির টাকা নেতার অ্যাকাউন্টে

আমপান দুর্নীতি, পঞ্চায়েত এলাকার গাছ চুরি সহ আগে একাধিক অভিযোগ উঠেছে রঘুনাথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অজিত কুমার সামন্তর বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২১ ০৭:৪৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

বাংলা আবাস যোজনার টাকা উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে না ঢুকে ঢুকল তৃণমূল নেতার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। যা নিয়ে শোরগোল তুলে পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে সরব বিরোধীরা। অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে প্রধানের সাফাই ‘ভুল হয়ে গিয়েছে’।

Advertisement

রঘুনাথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের কুমোরআড়া মহেশবাড় গ্রামের হরেকৃষ্ণ পাঁজা বছর খানেক আগে বাংলা আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির টাকা পান। দু’দফায় মোট এক লক্ষ ১০ হাজার টাকা পান তিনি। টাকা পেয়ে ছাদ ঢালাই পর্যন্ত নির্মাণের কাজ সেরে ফেলেন হরেকৃষ্ণ। নিয়ম অনুযায়ী তৃতীয় কিস্তির টাকা একশো দিনের জব কার্ডের মাধ্যমে কয়েক দফায় পাওয়া যায়। নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা না ঢোকায় সম্প্রতি পঞ্চায়েতে গিয়ে যোগাযোগ করেন হরেকৃষ্ণ। পঞ্চায়েত থেকে তাঁকে জানানো হয় জব কার্ড আইডি অনুযায়ী ১ জুলাই ও ২০ জুলাই দু’দফায় মোট ৬ হাজার ১২০ টাকা ঢুকেছে। তবে সে টাকা তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢোকেনি। ঢুকেছে ঋষিকেশ পাঁজা নামে এক ব্যাক্তির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে।

ঋষিকেশ পাঁজা রঘুনাথবাড়ি পঞ্চায়েতের ১২ নম্বর সংসদ এলাকার তৃণমূল বুথ সভাপতি। কিন্তু একজন উপভোক্তার টাকা অন্য এক জনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে গেল কী ভাবে? রঘুনাথবাড়ি পঞ্চায়েতের প্রধান অজিত কুমার সামন্ত বলেন, ‘‘একশো দিনের কাজের মাধ্যমে আবাস যোজনায় উপভোক্তার টাকা দেওয়া হয় দু'রকম পদ্ধতিতে।অর্ধেক টাকা দেওয়া হয় সরাসরি উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে।বাকি অর্ধেক দেওয়া হয় উপভোক্তার জব কার্ড আইডির সাথে সংযুক্ত আধার কার্ডের লিঙ্ক ধরে।অর্থাৎ ওই আধার কার্ডের সাথে যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর সংযুক্ত রয়েছে টাকা ঢুকবে সেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে।’’ সে ক্ষেত্রে হরেকৃষ্ণর টাকা ঋষিকেশের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে গেল কী করে? প্রধানের সাফাই,‘‘হরেকৃষ্ণর জব কার্ড আইডির সাথে ঋষিকেশের আধার কার্ড নম্বর লিঙ্ক হয়ে রয়েছে। কী করে এটা হল জানি না। সম্ভবত ভুল হয়ে গিয়েছে।’’

Advertisement

বাড়ি তৈরির বরাদ্দ টাকা ফেরত চেয়ে পাঁশকুড়ার বিডিওকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন হরেকৃষ্ণ। তিনি বলেন,‘‘যিনি সুপারভাইজার ছিলেন তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার টাকা অন্যের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়েছেন।যাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হয়েছে তিনি এখানকার তৃণমূলের বুথ সভাপতি।টাকা ফেরত চেয়ে আমি বিডিওর কাছে আবেদন জানিয়েছি।’’

আমপান দুর্নীতি, পঞ্চায়েত এলাকার গাছ চুরি সহ আগে একাধিক অভিযোগ উঠেছে রঘুনাথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অজিত কুমার সামন্তর বিরুদ্ধে। গাছ চুরি সংক্রান্ত একাধিক মামলা এখনও চলছে তাঁর বিরুদ্ধে। ফের আবাস যোজনায় দুর্নীতিতে প্রধানের নাম জড়ানোয় বিজেপির জেলা কমিটির সদস্য অঞ্জন মাইতি বলেন, ‘‘অজিত কুমার সামন্ত আপাদমস্তক দুর্নীতিপরায়ণ একজন মানুষ।তৃণমূলের আমলে কাটমানি ছাড়া কোনও পরিষেবা পাওয়া যায় না।এটা আরও একবার প্রমাণ হল।’’

তৃণমূলের ব্লক সভাপতি দীপ্তি জানা বলেন, ‘‘আমাদের দল কোনও দুর্নীতিকে সমর্থন করে না। এ ধরনের কোনও ঘটনা ঘটে থাকলে প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন