Coronavirus in Midnapore

বৃদ্ধার মৃত্যুতে করোনা তথ্য গোপনের অভিযোগ

শুক্রবার শ্বাসকষ্টে অসুস্থ ঝাড়গ্রাম শহরের এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০২০ ০৬:৫৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

ফের এক বৃদ্ধার মৃত্যুতে উঠে এল করোনা যোগ। একই সঙ্গে ফের তথ্যগোপনের অভিযোগে সরব হলেন শহরবাসীর একাংশ। তাঁদের ক্ষোভ, করোনা তথ্য লুকিয়ে ঝাড়গ্রাম জেলার বাসিন্দাদের জীবন নিয়ে খেলা হচ্ছে।

Advertisement

শুক্রবার শ্বাসকষ্টে অসুস্থ ঝাড়গ্রাম শহরের এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়। ওই বৃদ্ধাকে বাড়িতেই হোম আইসোলেশনে থাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন পুরসভার স্বাস্থ্য কর্মীরা। তাঁর ছেলে একসপ্তাহ আগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ঝাড়গ্রাম করোনা হাসপাতালে ভর্তি। এর আগে বুধবার ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশালিটিতে এক বৃদ্ধার মৃত্যুর আগে ট্রু-ন্যাটের প্রাথমিক রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছিল।

শুক্রবার যিনি মারা গিয়েছেন তাঁর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট শুক্রবার রাত পর্যন্ত পরিবার পায়নি। তবে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, জেলায় করোনা আক্রান্তের মৃত্যু এই প্রথম। বৃদ্ধার বৌমা বলেন, ‘‘দু’-তিনদিন ধরেই শাশুড়ি মায়ের কাশি হচ্ছিল। স্বাস্থ্য দফতরের নম্বরে ফোন করলেও কেউ আসেননি। বৃহস্পতিবার রাতে শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় ফের ফোন করি। শুক্রবার সকালে প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট হওয়ায় ফের ফোন করতে সকাল ৮টা নাগাদ পিপিই পরে দু’জন স্বাস্থ্য কর্মী অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে আসেন। কিন্তু ওঁরা শাশুড়ি মাকে নিয়ে যেতে পারেননি। সাড়ে দশটা নাগাদ ফের একটি অ্যাম্বুল্যান্সে কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মী এসে শাশুড়িমাকে নিয়ে যান।’’

Advertisement

স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই বৃদ্ধার ছেলে করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরে তাঁর স্ত্রী, মা ও ৯ বছরের ছেলের করোনা পরীক্ষা করানো হয়। সেই রিপোর্ট কী তা কেউ জানে না। প্রাক্তন কাউন্সিলর নবু গোয়ালা বলেন, ‘‘আমাদের বলা হয়েছিল করোনা আক্রান্তের পরিবারের বাকি সদস্যদের রিপোর্ট নেগেটিভ। এখন তো অন্য কথা শুনছি। ওই বৃদ্ধাকে বাড়িতে রেখে চিকিৎসার সুযোগটুকুও দেওয়া গেল না।’’ এ দিন সকাল এগারোটা নাগাদ করোনা হাসপাতালে ভর্তির কিছুক্ষণের মধ্যেই বৃদ্ধার মৃত্যু হয়। তাঁর ছেলে করোনা হাসপাতালে ভর্তি থাকায় মাকে শেষ দেখাও দেখতে পারেননি। বিকেলে বৃদ্ধার দেহ জীবাণুনাশক দিয়ে জিপার প্যাক করে পুরসভাকে দেওয়া হয়। এক পুরকর্মীর হাতেই ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। পুলিশি পাহারায় পুর উদ্যোগে নহড়খালের ধারে সৎকার করা হয়। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, আপাতত, ওই এলাকাটি করোনায় মৃত ব্যক্তিদের সৎকারের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে জেলাস্তরে করোনার প্রকৃত তথ্য না পাওয়ার অভিযোগে আইনি পদক্ষেপ করতে চলেছেন শহরের বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা। ঝাড়গ্রাম আদালতের আইনজীবী কৌশিক সিংহ বলেন, ‘‘করোনা নিয়ে জেলায় সঠিক তথ্য না মেলায় মানুষের মনে ভয় তৈরি হয়েছে। অসতর্কতাও বেড়েছে। আইনগত ভাবে প্রকৃত তথ্য পাওয়ার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।’’ শহরের বাসিন্দা বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী তথা মেদিনীপুর কলেজের অধ্যাপক ফটিকচাঁদ ঘোষও জানান, রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে। ঝাড়গ্রামের সাংসদ কুনার হেমব্রম বলছেন, ‘‘শুধু কন্টেনমেন্ট জ়োন করে কী লাভ যদি প্রকৃত তথ্য না দেওয়া হয়? এলাকা-ভিত্তিক করোনা তথ্য প্রকাশ করে মানুষকে সচেতন করা প্রয়োজন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন