প্রতীকী ছবি।
জেলার সব ব্লকেই একাধিক অঙ্গনওয়াড়ি রয়েছে। ব্যতিক্রম ছিল শুধু খড়্গপুর- ২। এত দিন এই ব্লকে কোনও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র গড়ে ওঠেনি। ফলে, বঞ্চিত হচ্ছিলেন প্রসূতি ও শিশুরা। অবশেষে সঙ্কট কাটতে চলেছে। এক লপ্তে ২৮৯টি অঙ্গনওয়াড়ি পেতে চলেছে খড়্গপুর- ২ ব্লক।
সম্প্রতি দু’দিনের সফরে জেলায় এসেছিলেন নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা। মেদিনীপুরে প্রশাসনিক বৈঠকও করেন তিনি। প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, বৈঠকে খড়্গপুর-২ ব্লকে অঙ্গনওয়াড়ি না থাকার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। তারপরই যত দ্রুত সম্ভব এখানে অঙ্গনওয়াড়ি চালুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা সফরে মন্ত্রী শশীকে বলতে শোনা গিয়েছিল, “এই জেলার খড়্গপুর-২ ব্লকে কোনও অঙ্গনওয়াড়ি নেই, ভাবা যায়? শীঘ্রই কেন্দ্রগুলো চালু করবো।” পশ্চিম মেদিনীপুরের ডিপিও অসিত মণ্ডলেরও আশ্বাস, “খড়্গপুর-২ ব্লকে শীঘ্র অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলো চালু হবে।”
প্রত্যন্ত এলাকায় অঙ্গনওয়াড়ি না থাকা মানে প্রসূতি এবং শিশুদের পুষ্টিগত সমস্যা তরান্বিত হওয়া। কারণ, এলাকার কচিকাঁচা এবং অন্তঃসত্ত্বাদের পুষ্টিকর খাবার, প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয় এই কেন্দ্র থেকে। ফলে, এতদিন ওই ব্লকে সমস্যা হচ্ছিলই। অঙ্গনওয়াড়ি চালু হলে সেই সমস্যা মিটবে। ২৮৯টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চালুর খসড়া পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়েছে ইতিমধ্যে। কোথায় কোথায় কেন্দ্রগুলো তৈরি হবে তার খসড়া তৈরি হয়েছে। মেদিনীপুরের প্রশাসনিক বৈঠকেও এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
খড়্গপুর-২ ব্লকে অঙ্গনওয়াড়ি চালুর আর্জি জানিয়ে মন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছিলেন জেলা পরিষদের উপাধ্যক্ষ অজিত মাইতি। বছর তিনেক আগেই তিনি বিষয়টি মন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন। অজিতবাবুর কথায়, “অঙ্গনওয়াড়িগুলি চালু হলে এলাকার মানুষই উপকৃত হবেন।”
পশ্চিম মেদিনীপুরের বেশিরভাগ অঙ্গনওয়াড়িই অবশ্য বেহাল। বেশিরভাগ কেন্দ্রেই এক ভবনের মধ্যে রান্নাঘর, শৌচাগার, গুদাম রয়েছে। যেখানে লেখাপড়া চলে তার অদূরে জ্বলে উনুন। হাঁড়িতে খিচুড়ি চড়ানো হয়। পাশেই চাল-ডাল মজুত থাকে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে যা মাঝেমধ্যে ইঁদুর খেয়ে যায়। অনেক কেন্দ্রের ছাদ চুঁইয়ে আবার জল পড়ে। পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামে মোট ৮,৭২০টি অঙ্গনওয়াড়ি রয়েছে। এর মধ্যে নিজস্ব ভবন রয়েছে ৬,১৯২টির। জলের ব্যবস্থা রয়েছে ৫,০২১টিতে। জেলায় এসে মন্ত্রী শশী নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন, “খো লা আকাশের নীচে কেন্দ্র বন্ধ করতে হবে।” জেলা প্রশাসনের এক কর্তা মানছেন, “বেশ কিছু কেন্দ্রে পরিকাঠামোগত কিছু সমস্যা রয়েছে। কিন্তু আমরা চাইলেই তো সব কিছু করতে পারছি না। ভাড়া বাড়িতে সব করবো কী ভাবে? তবু চেষ্টা করছি।”