শিকার: এই রিপোর্ট নিয়েই সমস্যা। নিজস্ব চিত্র
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ‘পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ’ (পিপিপি) মডেলে গড়ে ওঠা ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে স্ক্যানের ভুল রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগ উঠল। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে হাসপাতালের চিকিৎসক রোগীর চিকিৎসা করে বাড়িও পাঠিয়ে দেন বলে অভিযোগ। বাড়ি ফিরে বিষয়টি নজরে আসে রোগীর পরিজনেদের। সোমবার হাসপাতাল সুপার তন্ময়কান্তি পাঁজার কাছে অভিযোগ জানান রতন মোদক নামে ওই রোগীর বাড়ির লোকেরা
গত বৃহস্পতিবার চন্দ্রকোনার গোঁসাইবাজারের বাসিন্দা বছর ষাটের রতনবাবুর হঠাৎ শরীরের ডান দিক সামান্য অবশ হয়ে যায়। শুক্রবার সকালে মেডিক্যালের বর্হিবিভাগে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শে রতনবাবুর স্ক্যান করা হয়। স্ক্যান রিপোর্ট পরের দিন মিলবে বলে বৃহস্পতিবার পরিজনেরা রতনবাবুকে বাড়ি নিয়ে আসেন।
চিকিৎসকের পরামর্শে শনিবার সকালে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। স্ক্যানের রিপোর্টের ভিত্তিতে চিকিৎসা করে রবিবার বিকেলে রতনবাবুকে ছুটি দিয়ে দেন চিকিৎসকেরা। বাড়ি ফিরে চিকিৎসার কাগজপত্র গুছিয়ে রাখার সময় পরিজনেরা লক্ষ্য করেন, হাসপাতাল থেকে দেওয়া স্ক্যান রিপোর্ট রতনবাবুর নয়। বছর কুড়ির একটি ছেলের স্ক্যান রিপোর্ট ভুল করে সেন্টারের লোকেরা তাঁদের দিয়ে দিয়েছেন। রিপোর্ট নেওয়ার সময় বিষয়টা তাঁরাও লক্ষ্য করেননি। অভিযোগ, চিকিৎসকও বিষয়টি নজর না করে চিকিৎসা করে রোগীকে ছুটিও দিয়ে দিয়েছেন।
দিন কয়েক আগে মেদিনীপুর মেডিক্যালেই চিকিৎসার গাফিলতিতে এক রোগী মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। পেটে অস্ত্রোপচারের সময় এক মহিলার ফুসফুস ফুটো করে ও মলাশয়ের নালি কেটে দেওয়ার অভিযোগেও সরব হন রোগীর পরিজনেরা। তারপরেও যে পরিস্থিতির বিশেষ পরিবর্তন হয়নি, এ দিনের ঘটনাতেই তার প্রমাণ মিলল।
রতনবাবুর ছেলে গৌতম মোদকের অভিযোগ, ‘‘হাসপাতাল থেকে ভুল রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। ২০ বছরের ছেলের রিপোর্ট দেখে ৬০ বছর বয়স্ক লোকের চিকিৎসা করে চিকিৎসকেরা বাড়ি পাঠিয়ে দিলেন। কী যে চলছে জানি না।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘বিষয়টি চিকিৎসকদের নজরে এলে ভুল রিপোর্টের ভিত্তিতে চিকিৎসা হত না।’’ হাসপাতালের স্ক্যান সেন্টারের টেকনিশিয়ান বাপন ঘোষের দাবি, ‘‘আইডি নম্বর ভুল হয়ে যাওয়ায় রিপোর্টে শুধু রোগীর নাম ভুল ছাপা হয়েছে। তবে স্ক্যানের রিপোর্ট ঠিকই রয়েছে।’’
এ বিষয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যালের সুপার তন্ময়কান্তিবাবু বলেন, ‘‘কোথাও একটা ভুল হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’’