—ফাইল চিত্র।
রেলশহরের গণ্ডি ছাড়িয়ে মারণ ডেঙ্গির থাবা এ বার খড়্গপুর গ্রামীণ এলাকায়। মশাবাহী এই রোগে মৃত্যু হয়েছে প্রতাপপুরের যুবক বিপ্লব প্রতিহার (২০)-এর। ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি হয়েছিলেন বিপ্লব। শুক্রবার সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
চলতি মরসুমে এই নিয়ে জেলায় ডেঙ্গিতে মৃত্যু হল ৩ জনের। বাকি দু’জন খড়্গপুর শহরের বাসিন্দা। পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “ওই যুবক ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়েই ভর্তি হয়েছিলেন। সব দিক খতিয়ে দেখছি।” জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান জানান, প্রতাপপুরে মেডিক্যাল টিম পাঠানো হচ্ছে। ওই দল খতিয়ে দেখবে। আরও কেউ জ্বরে ভুগছেন কি না, তাও দেখা হবে।
দিন কয়েক ধরে জ্বরে ভুগছিল বিপ্লব। স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে তাঁর চিকিত্সা চলছিল। কিন্তু শারীরিক অবস্থার তেমন উন্নতি হচ্ছিল না। শুক্রবার দুপুর একটা নাগাদ তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন পরিজনেরা। আর বিকেল তিনটে নাগাদ মারা যান ওই যুবক। বিসপ্তাহখানেক আগেও একবার জ্বর নিয়ে মেডিক্যালে ভর্তি হয়েছিলেন বিপ্লব। পরে শারীরিক অবস্থার উন্নতি হতে বাড়ি ফেরেন তিনি।
পুজোর মুখে যে ভাবে ডেঙ্গির প্রকোপ ছড়াচ্ছে, তাতে উদ্বেগ বাড়ছে। জেলার মধ্যে খড়্গপুর শহরেই ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। চলতি মরসুমে পশ্চিম মেদিনীপুরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ১২০। এর মধ্যে খড়্গপুর শহরে রয়েছেন ৯২জন। শহরের হাজার তিনেক মানুষ মশাবাহিত এই রোগের উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। হাসপাতালে শয্যা না পেয়ে অনেকে বাড়িতে চিকিত্সাধীন রয়েছেন অনেকে।
ডেঙ্গি মোকাবিলায় নজরদারি কমিটি, টাস্কফোর্স গড়া হয়েছে খড়্গপুরে। শুক্রবারই শহরে স্বাস্থ্য দফতর ও পুরসভার প্রতিনিধিরা দীর্ঘ বৈঠক করেছেন। সেখানে সাফাই অভিযানের পাশাপাশি সচেতনতা বাড়ানোর উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। ডেঙ্গি মোকাবিলায় পুরসভা যথাযথ কাজ করছে কি না তা দেখতে প্রতিদিন নজরদারি কমিটির সদস্যরা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরছেন। পুরসভার সাফাইয়ের কাজে অবশ্য সন্তুষ্ট নন জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা। জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথবাবুর কথায়, “এই সময়ের মধ্যে খড়্গপুরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরছি। পুরসভা কাজ করছে। গুরুত্ব দিয়েই পরিচ্ছন্নতার কাজ করছে। তবে বেশ কিছু এলাকায় জল জমে রয়েছে। রাস্তাতেও আবর্জনা পড়ে রয়েছে। এটা আরও গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্রবাবুর অবশ্য আশ্বাস, “উদ্বেগের কিছু নেই। মশা নিধনে অভিযান চলছে। পরিস্থিতির দিকে সতর্ক নজর রাখা হয়েছে।”