এ বার ভুয়ো চিকিৎসক পূর্ব মেদিনীপুরে

জেলায় প্রথম ভুয়ো ডাক্তার ধরা পড়ায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে ভগবানপুরে। এ দিন তাঁকে কাঁথি আদালতে তোলা বিচারক একদিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। আজ, ফের তাঁকে আদালতে তোলা হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৭ ০১:৫০
Share:

ধৃত রুহুল কুদ্দুস।

নিজের নাম থেকে ডিগ্রি সবই ভুয়ো।

Advertisement

গ্রামবাসীদের কাছে এমনই অভিযোগ পেয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর থেকে ওই ভুয়ো চিকিৎসককে শনিবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, “ওই ব্যাক্তি মুর্শিদাবাদে একটি নার্সিংহোমে কম্পাউন্ডার হিসেবে কাজ করতেন। পরে ভগবানপুরে ডাক্তার হিসেবে চেম্বার খুলেছিলেন।’’ শনিবার ওই চেম্বার থেকে পুলিশ ওই ব্যক্তির ব্যবহৃত স্টেথো, প্রেসক্রিপশন ও লেখার প্যাড, রক্তচাপ মাপার যন্ত্র এবং কিছু ইঞ্জেকশন বাজেয়াপ্ত করেছে। পুলিশের দাবি, ওই ব্যক্তি চিকিৎসক হিসাবে যে রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করতেন তা খতিয়ে দেখার পর তাতে অসঙ্গতি পাওয়া গিয়েছে। এরপরেই পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে ওই ‘ডাক্তার’-এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। বিষয়টি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর এবং সিআইডিকে জানানো হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

জেলায় প্রথম ভুয়ো ডাক্তার ধরা পড়ায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে ভগবানপুরে। এ দিন তাঁকে কাঁথি আদালতে তোলা বিচারক একদিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। আজ, ফের তাঁকে আদালতে তোলা হবে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস পাঁচেক ধরে ভগবানপুরের ভীমেশ্বরী বাজার, গোয়ালাপুকুর বাজার, মহম্মদপুর এলাকা এমনকী ওডিশার কটকেও ‘ডাক্তার’ পরিচয়ে চুটিয়ে রোগী দেখছিলেন ওই ব্যক্তি। বছর পঞ্চান্নর ওই ব্যক্তি বিএসসি পাশ। তাঁর ফি ছিল আড়াইশো টাকা। প্রেসক্রিপশনে নিজের নাম ডা: আর কে মণ্ডল (রবীন্দ্র কুমার মণ্ডল) লিখলেও তাঁর আসল নাম রুহুল কুদ্দুস। বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদ থানার ভবানীপুরে। ‘ডাক্তারি’-র সূত্রে তিনি কাঁথির সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডের কাছে ভাড়া থাকতেন। প্রতি শনিবার বিকেল ৩ টে থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রোগী দেখতেন ‘ডাক্তারবাবু’। রবিবার পুলিশ পাহারায় কাঁথি আদালতে যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘আমি এমবিবিএস পাশ করিনি।’’

আর কে মণ্ডল নামে সেই বিজ্ঞাপন

গোয়ালাপুকুর বাজার, মহম্মদপুরের এক ওষুধের দোকানে জেনারেল মেডিসিন, স্ত্রী ও প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে তিনি চুটিয়ে রোগী দেখছিলেন বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ। ওই দোকানের বিজ্ঞাপনের ফ্লেক্সে চিকিৎসকদের তালিকায় লেখা থাকত ডা: আর কে মণ্ডল, এমবিবিএস (কল) ডিজিও, এমডি (কল)। শুধু তাই নয়, বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হিসাবে তাঁর নামের নীচে লেখা থাকত, ‘অ্যাটাচ সার্ফ মাল্টি স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল, কটক’।

ভগবানপুর-১ এর বিএমওএইচ সুমন্ত হাজরা বলেন, ‘‘দিন কয়েক আগে ভীমেশ্বরী বাজার এলাকার কয়েকজন এসে আমাকে জানান, তাঁদের সন্দেহ ওই ডাক্তার ভুয়ো। কারণ, তিনি প্রেসক্রিপশনে যে রেজিস্ট্রেশন নম্বর লেখেন তাঁরা ইন্টারনেটে সার্চ করে দেখেছেন নম্বরটি অন্য একজনের। এরপরেই আমি শনিবার ওই ডাক্তারের গ্রেফতারের খবর জানতে পারি।’’ এ বিষয়ে সিএমওএইচ নিতাই চরণ মণ্ডলের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। এসএমএস করা হলেও কোনও উত্তর আসেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন