পূর্বতন টিচার-ইনচার্জ সুতপা ঘোষ অফিস ঘরের চাবি হস্তান্তর করতে রাজি হননি। শেষ পর্যন্ত পুলিশকে জানিয়ে জামবনি ব্লকের কাপগাড়ি এলাকার সেবাভারতী মহাবিদ্যালয়ে টিচার-ইনচার্জের অফিস ঘরের তালা ভাঙা হল। এর ফলে দায়িত্ব নেওয়ার দু’মাস পরে অফিস ঘরে ঢুকতে পারলেন কলেজের বর্তমান টিচার-ইনচার্জ বিনোদ চৌধুরী।
মঙ্গলবার টিচার-ইনচার্জের অফিস ঘরের তালা ভাঙার সময় উপস্থিত ছিলেন কলেজের প্রশাসক অসীমকুমার বেরা এবং শিক্ষক-শিক্ষিকারা। অসীমবাবু বলেন, “প্রাক্তন টিচার-ইনচার্জ সুতপা ঘোষকে বার বার অফিস ঘরের চাবি হস্তান্তর করতে বলা হলেও তিনি চাবি দেননি। বাধ্য হয়ে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জামবনি থানায় অভিযোগ জানানো হয়। আইনি পদক্ষেপ অনুযায়ী, এ দিন সবার উপস্থিতিতে টিচার-ইনচার্জের অফিস ঘরের দু’টি দরজার তালা ভাঙা হয়েছে। বেশ কিছু জিনিসপত্র পাওয়া যাচ্ছে না। সেগুলির সম্পূর্ণ তালিকা তৈরি হওয়ার পরে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে উপযুক্ত আইনি পদক্ষেপ করা হবে।”
গত অগস্টে এক ছাত্রীকে নিগ্রহের অভিযোগ ওঠে সুতপাদেবীর বিরুদ্ধে। পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন মেয়েটির বাবা। আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন সুতপাদেবী। সুতপাদেবীর ইস্তফার দাবিতে কলেজে লাগাতার আন্দোলন শুরু করে পড়ুয়ারা। সুতপাদেবীর বিরুদ্ধে কলেজের তহবিল তছরুপের অভিযোগ ওঠে। শেষ পর্যন্ত কলেজে প্রশাসক নিয়োগ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সুতপাদেবী কলেজে আসা বন্ধ করে দেন। পরে তাঁকে সরিয়ে বিনোদ চৌধুরীকে টিচার-ইনচার্জের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু সুতপাদেবী চাবি হস্তান্তর না করায় অফিস ঘরে ঢুকতে পারছিলেন না বিনোদবাবু।
কলেজের প্রশাসক অসীমবাবু জানান, এদিন টিচার ইনচার্জের ঘর থেকে প্রথম বর্ষের পাসকোর্সের ৬ টি বিষয়ের মোট ২,৭৮৮টি উত্তরপত্র পাওয়া যায়। উত্তরপত্রগুলি শিলদা ও মানিকপাড়া কলেজের পরীক্ষার্থীদের।
গত জুলাইয়ে সেবাভারতী কলেজের পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষা গুলি নেওয়া হয়। পরীক্ষার পরে উত্তরপত্রগুলি টিচার-ইনচার্জের ঘরে রাখা হয়েছিল। কিন্তু এরপর সুতপাদেবী টিচার-ইনচার্জের ঘরটি তালা দিয়ে চলে যাওয়ায় উত্তরপত্রগুলির মূল্যায়ন করা সম্ভব হয়নি। শীঘ্রই সেগুলির মূল্যায়ন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে পাঠানো হবে জানান কলেজের প্রশাসক অসীমবাবু।