হানা: মহিলা সমবায় ব্যাঙ্কে সিআইডি-র দল। —নিজস্ব চিত্র।
স্ত্রীর সঙ্গে গত তিন বছর তাঁর কোনও সম্পর্কই ছিল না— সিআইডির জিজ্ঞাসাবাদে এমনই দাবি করেছেন মহিলা সমবায় ব্যাঙ্কে অর্থ তছরুপের অভিযোগে ধৃত তৃণমূল নেতা সুকুমার ভুঁইয়া। যা শুনে সিআইডির এক কর্তার মন্তব্য, “অভিযুক্ত এখন মামলা থেকে বাঁচার চেষ্টা করছেন। ফলে, এমন দাবি তো করবেনই। তবে স্ত্রীর সঙ্গে যে বেশ ভালই সম্পর্ক ছিল, সেই প্রমাণ ইতিমধ্যে আমরা পেয়ে গিয়েছি।” সোমবারই সুকুমারবাবুকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে সিআইডি। মঙ্গলবার তাঁকে একপ্রস্থ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
যে ব্যাঙ্কে প্রায় ১ কোটি ৩১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা তছরুপ হয়েছে বলে অভিযোগ, সেই ‘মহিলা কো-অপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটি’র পরিচালন সমিতির সম্পাদিক মধুমিতা ভুঁইয়া হলেন ধৃত সুকুমারবাবুর স্ত্রী। অভিযোগ, স্ত্রীকে সামনে রেখে ব্যাঙ্কের সব কিছু এই তৃণমূল নেতাই পরিচালনা করতেন। তছরুপের মামলার তদন্তে নেমে ইতিমধ্যে সিআইডি সুকুমারবাবুকে হেফাজতে নিয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে সিআইডির একটি দল ব্যাঙ্কেও হানা দেয়। দীর্ঘক্ষণ তল্লাশি চলে। বেশ কিছু নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়। সিআইডির এক সূত্রে খবর, কলকাতার ভবানী ভবন থেকে তদন্তকারী সংস্থার একাধিক কর্তা মেদিনীপুরে আসতে পারেন। তাঁরা যখন ব্যাঙ্কে যাবেন, তখনই সুকুমারবাবুকেও নিয়ে যাওয়া হবে।
ইতিমধ্যে ব্যাঙ্কের এক কর্মী এই মামলায় গোপন জবানবন্দি দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। মঙ্গলবারই তাঁর মেদিনীপুর আদালতে এসে গোপন জবানবন্দি দেওয়ার কথা ছিল। তবে এ দিন সিআইডির দল ব্যাঙ্কে যাওয়ায় তিনি ব্যাঙ্ক ছেড়ে আসতে পারেননি। দু’-একদিনের মধ্যেই তিনি আদালতে এসে গোপন জবানবন্দি দেবেন। এ দিন ব্যাঙ্কের বেশ কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে কথা বলেছেন তদন্তকারী অফিসারেরা। সুকুমারবাবু কতক্ষণ ব্যাঙ্কে থাকতেন, শেষ কবে এসেছিলেন, তাঁর সঙ্গে কার কার সুসম্পর্ক ছিল, এ সব জানার চেষ্টা করেছেন। সুকুমারবাবুকে ৫ দিনের জন্য হেফাজতে পেয়েছে সিআইডি। আগামী ২৭ মে ফের তাঁকে মেদিনীপুরের সিজেএম আদালতে হাজির করাতে হবে।
মহিলা সমবায় ব্যাঙ্কে অর্থ তছরুপের এই মামলায় আরও কয়েকজন জড়িত। তাদের খোঁজে ইতিমধ্যে কয়েকটি এলাকায় তল্লাশি-অভিযান চালানো হয়েছে। তারা কোথায় থাকতে পারে, মঙ্গলবার জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে তা সুকুমারবাবুর কাছেও জানতে চাওয়া হয়েছিল। তবে তিনি সদুত্তর দেননি। তাঁর দাবি, কে, কোথায় রয়েছেন তা জানা নেই।