হোমের প্রতিবন্ধী এক কিশোরীর অস্বাভাবিক মৃত্যুতে তার দেহের ময়নাতদন্ত নিয়ে টালবাহানায় পরিবারের লোকজনের হয়রানির অভিযোগ উঠল।
নন্দীগ্রামের একটি আবাসিক হোমে থাকা মণিমালা মনি নামে ওই কিশোরী গত সোমবার দুপুরে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেদিনই সন্ধ্যা ৭ টা নাগাদ তার মৃত্যু হয়। সমস্যার শুরু তারপর থেকেই।
সরকারি নিয়ম মেনে ওই কিশোরীর মৃত্যুর কারণ জানতে প্রশাসনিক তদন্ত ও ময়নাতদন্তের সিদ্ধান্ত হয়। মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলা হাসপাতালের মর্গে থাকা ওই কিশোরীর মৃত্যুর ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ে তদন্ত হয়। কিন্তু এদিন মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়নি। জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কিশোরীর মা এবং হোমের আধিকারিককে জানান বুধবার সকাল ১১টায় মৃতদেহ ময়নাতদন্ত হবে।
হোম কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, এ দিন মৃতদেহ ময়নাতদন্ত হবে জানানো হলেও দুপুর ১টা নাগাদ জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান যে এখানে কিশোরীর ময়নাতদন্ত হবে না। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর সুপারিশ করা হয়।
এরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন কিশোরীর মা কাকলি মনি। তিনি বলেন, ‘‘সোমবার মেয়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে জেলা হাসপাতালে এসেছিলাম। সন্ধ্যা ৭ টা নাগাদ ও মারা যায়। মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে গিয়ে সৎকারের জন্য দু’দিন ধরে হাসপাতালে অপেক্ষা করছি। কিন্তু এখনও মেয়ের দেহ পেলাম না। মেয়ের মৃত্যুর পর দেহ পেতে এ ভাবে হয়রান হতে হবে ভাবিনি।’’
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা হাসপাতাল সুপার গোপাল দাস অবশ্য বলেন, ‘‘মঙ্গলবারই ওই কিশোরীর মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এদিন বিকেলে ম্যাজিস্ট্রেট তদন্ত শেষ হতে সন্ধ্যা ৬টা বেজে যায়। এর পর ময়নাতদন্তের ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসকের কিছু নথিপত্র সংগ্রহ করতে সময় লাগায় ওই দিন ময়নাতদন্ত হয়নি।’’ তিনি জানান, বুধবার সকাল ১১ টায় ময়নাতদন্তের কথা জানানো হয়। কিন্তু জরুরি কাজে ওই চিকিৎসক আদালতে চলে যাওয়ায় ময়নাতদন্ত হয়নি। পরে জেলা সমাজ আধিকারিককে জানিয়ে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর সুপারিশ করা হয়।