—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
কন্যা সন্তান হওয়ার ‘অপরাধে’ নাতনিকে বিষ খাইয়েছিলেন ঠাকুমা। দীর্ঘ ১১ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পরে মঙ্গলবার ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরল সেই শিশুকন্যা। অন্য দিকে, জেল হেফাজতে রয়েছেন অভিযুক্ত ঠাকুমা।
মঙ্গলবার সকালে এসএনসিইউ থেকে শিশুকে বার করে এনে তার মায়ের কোলে দিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। মেয়েকে কোলে পেয়ে আনন্দে কেঁদে ফেলেন ওই শিশু কন্যার মা, বাবা ও দিদা। জেলাশাসক আকাঙ্ক্ষা ভাস্কর বলেন, ‘‘শিশুটিকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকেরা খুব লড়াই করেছেন।’’ তিনি জানান, বাল্যবিবাহ রোধ এবং লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ বিষয়ে সচেতনতা শিবির করতে তিনি ওই এলাকায় গিয়েছিলেন। ঝাড়গ্রাম হাসপাতালের সুপার অনুপম পাখিরা বলেন, ‘‘চিকিৎসকেরা আপ্রাণ কাজ করে গিয়েছেন। সকলের চেষ্টায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে শিশু কন্যা।’’
উল্লেখ্য, গত ১ নভেম্বর নাবালিকা মায়ের আট দিনের শিশুকে বিষ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ঠাকুমার বিরুদ্ধে। অসুস্থ শিশুর চিকিৎসা চলছিল ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। ওই শিশু কন্যার মামা বাড়ির তরফে থানায় অভিযোগ জানানোর পরে ২ নভেম্বর ঠাকুমাকে গ্রেফতার করে ঝাড়গ্রামের বেলিয়াবেড়া থানার পুলিশ। ধৃতের বিরুদ্ধে বিষ খাওয়ানো ও খুনের চেষ্টার অভিযোগে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১২৩ ও ১০৯ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়।
পরিবার ও হাসপাতাল সূত্রে খবর, ১ নভেম্বর সকালে শিশুকন্যার মুখ থেকে ফেনা বের হতে দেখেন মা। তাঁর কান্নাকাটির শব্দে স্থানীয়েরা ভিড় জমান। প্রথমে ওই শিশুকন্যাকে স্থানীয় গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে শিশুটিকে গোপীবল্লভপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে শিশু বিশেষজ্ঞেরা শিশুর পেট ওয়াশ করার পরে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার করেন। তার পর থেকেই সদ্যজাত ভর্তি ছিল ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের এসএনসিইউ বিভাগে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, শিশুটিকে যখন হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় তখন তার শ্বাসকষ্ট ও খিঁচুনি হচ্ছিল। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল।’’