একরত্তি সন্তানকে বাড়িতে রেখে কাজের জায়গায় এসে স্বস্তি পান না কর্মরতা মহিলারা। বাচ্চা ঠিকমতো খেল কিনা, ঘুমলো কিনা— সারাক্ষণই সেই চিন্তা থেকে যায়। একটু বড় হলে তার সঙ্গে জুড়ে যায় পড়াশোনার ভাবনা। সমস্যা বুঝে এ বার ৬মাস থেকে ১০ বছরের শিশুদের জন্য ‘ক্রেস’ চালু করছে খড়্গপুর আইআইটি। এই প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষিকা, মহিলা কর্মী ও গবেষকদের কথা ভেবেই এই বন্দোবস্ত। আজ, বুধবার আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে এই উপহার আইআইটি কর্তৃপক্ষের।
মঙ্গলবার খড়্গপুর আইআইটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রথমে ক্যাম্পাসের একটি ‘এ’ টাইপ কোয়ার্টারকে ‘ক্রেস’-এর আদলে সাজিয়ে তোলা হয়েছিল। পরে কলকাতার একটি নামী মন্টেসরি হাউজের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এই কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ৫৩ জন শিশু এই কেন্দ্রে ভর্তি হয়েছে। আইআইটি-র ক্রেস কমিটির সভাপতি তথা স্থাপত্যবিদ্যা ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষিকা সঙ্ঘমিত্রা বসু বলেন, “২০১৩ সালে যখন আমাদের অধিকর্তা পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী প্রতিষ্ঠানের শিক্ষিকাদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন, তখনই ক্রেস চালুর ভাবনা শুরু হয়। ২০১৫ সালে আমরা চূড়ান্ত পরিকল্পনা জমা দিই। অবশেষে তা চালু হল।”
শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ‘ক্রেস’ সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ১২ ঘন্টা খোলা থাকবে। থাকা-খাওয়া-শোওয়া-খেলাধুলোর পাশাপাশি কম্পিউটার শিক্ষারও ব্যবস্থাও থাকছে। এই সিদ্ধান্তে খুশি আইআইটির শিক্ষিকা, মহিলা কর্মী ও গবেষকরা। ভূ-বিদ্যা বিভাগের শিক্ষিকা চন্দ্রাণী সিংহ বলেন, “আমার চার বছরের মেয়ে রয়েছে। এতদিন এখানে শান্তিতে পড়াতে পারতাম না। আয়া রেখেও স্বস্তি ছিল না। ক্যাম্পাসে ক্রেস চালু হওয়ায় এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়া গেল।” আইআইটির ধাতুবিদ্যার শিক্ষিকা ইন্দ্রাণী সেনের কথায়, “মাতৃত্বকালীন ছুটির পরে ৫ মাসের ছেলেকে বাড়িতে আয়ার কাছে রেখে আসতাম। এখন ছেলের বয়স তিন। ওকে ক্রেসে ভর্তি করে নিশ্চিন্ত হলাম।” ভূ-বিদ্যার গবেষক ছাত্রী সুস্মিতা মিশ্রের স্বামী বিশ্বভারতীর অধ্যাপক। তিনিও ৬ বছরের ছেলেকে ক্রেসে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।