নেই রেলিং, নীচে তাকালে বুক কাঁপে

স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, দীর্গদিন ধরেই সেতুর এমন হাল। অথচ তাঁদের উপায় নেই। তাই বিপজ্জনক জেনেও য়াতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। রাতের পরিস্থিতি তো আরও ভয়ানক। অন্ধকার ভাঙাচোরা সেতুতে টর্চের আলো ফেলে সাবধানে চলাফেরা করতে হয়।

Advertisement

শান্তনু বেরা

কাঁথি শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৭ ০৭:৪০
Share:

মরণফাঁদ: নিজস্ব চিত্র

জীর্ণ কংক্রিটের সেতুটি লম্বায় প্রায় ১০০ ফুট। সেতুর মাঝের সামান্য অংশে ভাঙা রেলিং দেখে মালুম হয় কোনওসময় সেতুর দু’পাশেই রেলিং ছিল। স্থানীয় মানুষের কাছেও তার সত্যতা জানা গেল। যদিও তাঁরাই জানালেন, দু’পাশের রেলিং বহু আগেই খালের জলে চলে গিয়েছে। তবে শুধু রেলিং নয়, সেতুর মাঝে বড় বড় ফাটল (পা গলে যেতে পারে) দিয়ে উঁকি মারছে নীচের বর্ষায় টইটম্বুর খালের জল। সেতু ধরে রাখতে যে কংক্রিটের পিলার রয়েছে খালে সেগুলিরও পলেস্তারা উঠে গিয়ে জীর্ণদশা।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, দীর্গদিন ধরেই সেতুর এমন হাল। অথচ তাঁদের উপায় নেই। তাই বিপজ্জনক জেনেও য়াতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। রাতের পরিস্থিতি তো আরও ভয়ানক। অন্ধকার ভাঙাচোরা সেতুতে টর্চের আলো ফেলে সাবধানে চলাফেরা করতে হয়। না হলেই একেবারে খালের জলে।

কাঁথি মহকুমার রামনগর ২ ব্লকের চম্পা খালের উপর কংক্রিটের এই সেতুর একদিকে চকগুলি আর অন্যদিকে মাধবপুর গ্রাম। দুটি গ্রাম-সহ আশপাশের ভেড়িবারাঙ্গা, দামোদরপুর, জগদীশপুর, বাঁধিয়া, মিরগোদা ও নাসিরপুর গ্রামের কয়েক হাজার গ্রামবাসী এই সেতু ব্যবহার করেন। সকলেরই কথায়, ‘‘প্রায় তিন দশক আগে তৈরি হওয়া এই সেতু এখন আমাদের কাছে সাক্ষাৎ বিভীষিকা।’’ বর্ষা নামলে আতঙ্ক আরও বাড়ে। কারণ তখন খালে জলও বেড়ে যায়।

Advertisement

দেপাল বাণেশ্বরী চারুবালা বিদ্যামন্দিরের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী অঞ্জনা আদক, দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র দেবাঞ্জন বেরার দাবি, “এখন যা অবস্থা তাতে যে কোনও সময় হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়তে পারে। অথচ অন্য পথও নেই। ফলে প্রতিদিন বাধ্য হয়েই য়াতায়াত করতে হয়।’’ চকগুলি গ্রামের বাসিন্দা সুরজিৎ পাত্র কর্মসূত্রে কলকাতায় থাকেন। তাঁর কথায়, ‘‘অনেক সময় গ্রামে ফিরতে রাত হয়ে যায়। তখন কিছু করার থাকে না। ইষ্টনাম জপতে জপতে সেতু পার হই।” মাধবপুরের বধূ মিনতি জানা বলেন, “এমনি সময় তো বটেই, বৃষ্টি হলে আরও ভয় করে।’’

রামনগর-২ এর বিডিও প্রীতম সাহা বলেন, “সেতুর এমন শোচনীয় দশা নিয়ে কেই কখনও অভিযোগ জানাননি। বিষয়টি আমারও জানা ছিল না। খোঁজ নিচ্ছি।’’

সেতু নির্মাণ বা মেরামতির বিষয়টি দেখভালের দায়িত্ব সেচ দফতরের। কাঁথি মহকুমা সেচ দফতরের কার্যনির্বাহী আধিকারিক স্বপন পণ্ডিত বলেন, ‘‘এত পুরনো সেতু মেরামত করে বিশেষ লাভ হবে না। মহকুমার বেশ কিছু নতুন সেতুর জন্য মাটি পরীক্ষা হচ্ছে। দফতরে বিশেষ টাকাও নেই। তাই নতুন করে সেতু তৈরির কথা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে আধিকারিকদের পাঠিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন