খন্দপথ: মেচেদা-তমলুক রাজ্য সড়কের এমনই হাল। নিজস্ব চিত্র
মেচেদা রেল স্টেশন ও সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড থেকে জেলা সদর তমলুক শহর হয়ে হলদিয়ায় শেষ হয়েছে। মেচেদা-তমলুক রাজ্য সড়ক। প্রতিদিন কয়েক হাজার যাত্রীবাহী গাড়ি ছাড়াও হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের প্রচুর লরি-ট্রাক-ট্রেলার যাতায়াত করে এই সড়কে। অথচ গুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক বেহাল হয়ে পড়ায় প্রতিদিন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
মেচেদা থেকে তমলুক শহরের নিমতলা মোড় পর্যন্ত প্রায় ১৮ কিলোমিটার এই সড়ক সংস্কার ও মজবুত করতে পূর্ত দফতর সাড়ে ২৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। সাত মাস আগে কাজও শুরু হয়েছে। ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ইতিমধ্যেই ঢিমেতালে কাজ করার অভিযোগ উঠেছে।
জেলা পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মেচেদা থেকে তমলুক শহরের মানিকতলা পর্যন্ত ১৪.১০ কিলোমিটার ও মানিকতলা থেকে নিমতলা মোড় পর্যন্ত ৩.৮ কিলোমিটার মিলিয়ে প্রায় ১৮ কিলোমিটার সড়ক মজবুত করার জন্য প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। গত বছর ২০ এপ্রিল থেকে কাজও শুরু হয়। কাজ শেষের সময়সীমা রয়েছে চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি। প্রথম পর্যায়ে মেচেদা থেকে রামচন্দ্রপুর ও পাইকপাড়ি পর্যন্ত কয়েকটি কালভার্ট চওড়া করার কাজ শুরু হয়। এ ছাড়া সড়কের ধারে থাকা বেশ কিছু জলাশয়ের পাড় বোল্ডার দিয়ে বাঁধানো শুরু হয়েছিল। কিন্তু বর্ষায় কালভার্ট সম্প্রসারণের কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সড়কের ওই সব অংশে গাড়ি চালানো বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। বর্ষার পর ফের কাজ শুরু হলেও তা ঢিমেতালে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই সঙ্গে অভিযোগ উঠেছে সড়ক মেরামতির কাজে টালবাহনারও।
জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে তমলুক শহরের মানিকতলা থেকে নিমতলা মোড় পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারে সরকারি জায়গা দখল করে থাকা দোকানঘর সহ বিভিন্ন নির্মাণ ভেঙে সড়ক সম্প্রসাণের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু মেচেদা থেকে তমলুক পর্যন্ত মেরামতি না হওয়ায় ওই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন কয়েকশো বাস, মালবাহী ভারী লরি যাতায়াতের ফলে খানাখন্দ তৈরি হয়ে বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। খারাপ রাস্তার জন্য দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ। কাজের সূত্রে প্রতিদিন বাসে মেচেদা থেকে তমলুক যাতায়াত করতে হয় মেচেদার বাসিন্দা শুভজিৎ অধিকারীকে। তাঁর কথায়, ‘‘রাস্তার মাঝে প্রচুর বড় বড় গর্ত থাকায় ঝাঁকুনির চোটে শরীর খারাপ লাগে। আমাদেরই যদি এমন অবস্থা হয় তাহলে যাঁরা রোগী নিয়ে যাতায়াত করেন তাঁদের কথা ভাবুন তো!’’
তমলুক শহর থেকে প্রতিদিন খড়গপুরে যাতায়াতকারী নারায়ণ দাস বলেন, ‘‘রাস্তা খারাপ থাকায় তমলুক থেকে মেচেদা পর্যন্ত বাসে যাওয়াটা যাত্রীদের কাছে বিভীষিকা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’তমলুক-হলদিয়া রুটের বাসচালক প্রতাপ দাসের অভিযোগ, ‘‘প্রশাসনের গাফিলতিতে রাস্তা খারাপের কারণে জোরে বাস চালানো যায় না। তাতে বিপদের সম্ভাবনা রয়েছে। অথচ যাত্রীদের গালমন্দ শুনতে হচ্ছে আমাদের।’’
জেলা পূর্ত দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার (সড়ক) অজয় কুমার সঞ্জয় বলেন, ‘‘মেচেদা থেকে নিমতলা মোড় পর্যন্ত সড়ক মেরামতির কাজ ছাড়াও রাস্তা চওড়া করার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ধাপে ধাপে কাজ হবে। ২০১৯ সালের মধ্যে তা শেষ হবে। কাজ হয়ে গেলে যাত্রী থেকে যানচালক সকলেরই সুবিধা হবে। তবে এখন রাস্তার খারাপ অংশ মেরামতির ব্যবস্থা হচ্ছে।’’