আবাস: ফাটা দেওয়াল, ছাদও। দাসপুর থানার আবাসনে। জানলার পাশে জমে আবর্জনা। ছবি: কৌশিক সাঁতরা
নিরাপত্তা দেওয়ার কথা যাঁদের, নিরাপত্তাহীনতা তাঁদেরই!
কোথাও খসে পড়ছে পলেস্তারা। কোথাও আবার দেওয়ালে গজিয়ে উঠেছে গাছ। ঘুরছে সাপও। দু’একদিন নয়, বছরের পর বছর এমন জীর্ণ আবাসনেই থাকতে বাধ্য হচ্ছেন পুলিশ কর্মীরা। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পুলিশ আবাসনগুলির খারাপ হালের কথা মানছেন পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়াও।
আবাসনগুলির হাল যে শুধু খারাপ তা নয়, অনেক আবাসনকে সরকারের পক্ষ থেকেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। একটি থানার আবাসনে গিয়ে দেখা গেল, বাড়ির প্লাস্টার খসে বেরিয়ে গিয়েছে ইট। কোথাও আবার দেওয়ালের ইটও আলগা হয়ে গিয়েছে। চটে গিয়েছে রং। বহু আবাসনের জানলা ভাঙা। শীতে কেউ ফ্লেক্স কেউ বা আবার চট টাঙিয়ে ঠান্ডা হাওয়া আটাকানোর চেষ্টা করেছেন। ইঁদুর-পিঁপড়ে থেকে বিভিন্ন পোকামাকড়ের উপদ্রব তো রয়েছেই। জেলার এক পুলিশ আধিকারিকের কথায়, ‘‘এই নরক যন্ত্রণা কতদিন সহ্য করতে হবে জানিনা। কোনও দিন না প্রাণটুকুও চলে যায়।”
মেদিনীপুর শহরের দেশবন্ধুনগরে পুলিশ লাইন, লাইব্রেরি রোডে পুলিশ ক্লাব ও প্রতিটি থানায় ওসি, ইন্সপেক্টর এবং পুলিশ কর্মীদের আবাসন রয়েছে। জেলায় মোট ২১টি থানা রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১৩-১৪টি থানার আবাসনেরই অবস্থা খারাপ বলে অভিযোগ। একই অবস্থা পুলিশ ক্লাবেও। অভিযোগ, সংস্কার না হওয়ায় পুলিশ লাইনের একাধিক ভবনেও ফাটল দেখা দিয়েছে।
দীর্ঘদিন আবাসনগুলির সংস্কার না হওয়ায় ক্ষুব্ধ একাংশ পুলিশ কর্মীও। মাঝে মধ্যে থানা উদ্যোগী হয়ে সাময়িকভাবে আবাসনগুলি সংস্কার করে। তবে তা বেশিদিন স্থায়ী হয় না। জঙ্গলমহলে তিন-চারটি থানার আবাসন সংস্কার হয়েছে। বাকি অধিকাংশ থানার আবাসনে কমবেশি একই ছবি বলে অভিযোগ। অন্য কোনও জায়গায় থাকার ব্যবস্থা না থাকায় পুলিশ কর্মী থেকে আধিকারিকরা ভগ্নপ্রায় আবাসনেই থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।
সমস্যার কথা মানছেন জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়াও। তাঁর আশ্বাস, ‘‘সংস্কারের বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে।’’