বামেদের ডাকা বনধে পূর্ব মেদিনীপুরের অধিকাংশ এলাকায় সাড়া মিলল না। উল্টে রাস্তায় দাপাল শাসক দল তৃণমূলের মিছিল। অন্যান্য দিনের মতই সড়কে বাস, ট্রেকার, ট্যাক্সি, টোটো ছিল স্বাভাববিক। দোকানপাট, স্কুল, কলেজ খোলা থাকল জেলার সর্বত্র।
নোট বাতিল নিয়ে সাধারণ মানুষের অসুবিধার অভিযোগ তুলে কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে সোমবার ধর্মঘটের ডাক দেয় বামেরা। সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে এই ধর্মঘট রুখতে রাজ্য সরকারের তরফে সরকারি কর্মীদের হাজিরা বাধ্যতামূলক করার নির্দেশিকা জারি থেকে সব রকম প্রস্তুতি নিয়েছিল পুলিশ-প্রশাসন। রবিবার সন্ধ্যাতেই জেলার প্রতিটি থানার পুলিশ স্থানীয় বাজার এলাকায় মাইকে প্রচার শুরু করে। সোমবার সকালে জেলার গুরুত্বপূর্ণ সব সড়কে পুলিশ টহল শুরু হয়ে যায়।
সকাল থেকে জেলার হলদিয়া–মেচেদা রাজ্য সড়ক, হলদিয়া-মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়ক, দিঘা-কলকাতা সড়ক, হলদিয়া- মেদিনীপুর সড়কে বাস চলাচল শুরু করে কোন বাধা ছাড়াই। আর দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়গপুর, পাঁশকুড়া-হলদিয়া, তমলুক-দিঘা রেলপথে ট্রেন চলাচল ছিল অন্যান্য দিনের মতই। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলা সদর তমলুক শহর সহ মেচেদা, পাঁশকুড়া, কোলাঘাট, নন্দকুমার, চণ্ডীপুর, নন্দীগ্রাম, ভগবানপুর, মহিষাদল এবং হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে দোকানপাট খুলেছে অন্যান্য স্বাভাবিক
দিনের মতই।
পূর্ব মেদিনীপুর ডিস্ট্রিক্ট বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক সুকুমার বেরা জানান, এ দিন জেলার ৯৫ শতাংশ বাস চলাচল করেছে। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘জেলায় বন্ধের কোন প্রভাব নেই। অন্য দিনের মতই অফিসের কর্মীদের হাজিরা ছিল এবং স্কুল-কলেজ খোলা ছিল। কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।’’ বন্ধ ডাকা হলেও তা যে এ দিন জেলায় সফল হয়নি, মানছেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহিও। নিরঞ্জনবাবুর অভিযোগ, ‘‘হলদিয়া শিল্পাঞ্চল-সহ জেলার সর্বত্র ধর্মঘট রুখতে পুলিশ-প্রশাসনকে ব্যবহার করে বাস চালাতে বাধ্য করা হয়েছে। একই পুলিশ দিয়ে বাজারগুলিতে প্রচার করে দোকান খোলাতে বাধ্য করা হয়েছে। তাই ধর্মঘটে মিশ্র প্রভাব পড়েছে।’’
সোমবার বামেদের হরতালে কোনও প্রভাবই পড়ল না ঘাটাল মহকুমায়। এ দিন মহকুমার পাঁচটি ব্লকেই জনজীবন স্বাভাবিকই ছিল।রাস্তায় গাড়ি চলাচলও করেছে। বামেরা ঘাটালে কোনও মিছিলই বের করেনি। সোমবার জঙ্গলমহলে বন্ধের প্রভাব কার্যত পড়েনি। ঝাড়গ্রাম শহর-সহ সর্বত্রই জনজীবন স্বাভাবিক ছিল। দোকান-বাজার খোলা ছিল। বিভিন্ন স্কুলে এদিন বার্ষিক পরীক্ষা হয়েছে। ব্যাঙ্ক ও ডাকঘর খোলা ছিল। তবে বেশির ভাগ এটিএম-এ টাকা না থাকায় আমজনতার দুর্ভোগের অন্ত ছিল না।