ঋণ শোধ করতে পারেননি কাউন্সিলরের স্বামী, বাড়িতে গিয়ে হেনস্থার মুখে ব্যাঙ্ক কর্মীরা

ওই ব্যাঙ্কের মেদিনীপুর শাখার ম্যানেজার কৃষ্ণেন্দু গোস্বামী বলেন, ‘‘ঋণ শোধ করেননি। তাই বকেয়া আদায়ে কর্মীরা গিয়েছিলেন। তখন তাঁদের হেনস্থা করা হয়। কর্মীরা ফিরে এসে সব জানান। এরপরই কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:২০
Share:

প্রতীকী ছবি।

স্কুটি কেনার জন্য ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়েছিলেন তৃণমূল কাউন্সিলরের স্বামী। চার বছরেও সেই ঋণ শোধ করেননি তিনি। ঋণ আদায়ে তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন ব্যাঙ্ক কর্মীরা। কাউন্সিলরের স্বামী তখন বাড়িতে ছিলেন না। তবে কাউন্সিলর ছিলেন। অভিযোগ, তিনিই ব্যাঙ্ক কর্মীদের হেনস্থা করেন। মেদিনীপুরের ওই মহিলা তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ব্যাঙ্কের তরফে পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়েছে। তৃণমূলই ওই ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতিতে ক্ষমতায় রয়েছে। ফলে, এমন ঘটনায় অস্বস্তিতে শাসক দল।

Advertisement

ওই ব্যাঙ্কের মেদিনীপুর শাখার ম্যানেজার কৃষ্ণেন্দু গোস্বামী বলেন, ‘‘ঋণ শোধ করেননি। তাই বকেয়া আদায়ে কর্মীরা গিয়েছিলেন। তখন তাঁদের হেনস্থা করা হয়। কর্মীরা ফিরে এসে সব জানান। এরপরই কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ
করা হবে।

হেনস্থায় অভিযুক্ত তৃণমূল কাউন্সিলর কল্পনা মুখোপাধ্যায় অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মানেননি। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ব্যাঙ্ক কর্মীরা তাঁকে অসম্মান করেছেন। কল্পনার কথায়, ‘‘আমি কাউন্সিলর। সব জেনেও ব্যাঙ্কের লোকজন আমাকে অসম্মান করেছে। আমি ওদের পরে আসতে বলেছিলাম। ওরা কোনও কথা শুনতে চাননি।’’

Advertisement

ঘটনাটি ঠিক কী?

মেদিনীপুরে পিপলস কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক থেকে ২০১৪ সালে স্কুটি কেনার জন্য ঋণ নেন সুসময় মুখোপাধ্যায়। সুসময় মেদিনীপুর শহরের বল্লভপুর এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর কল্পনা মুখোপাধ্যায়ের স্বামী। ব্যাঙ্ক সূত্রে খবর, ২০১৪ সালের ২৬ অগস্ট কনজিউমার বিনিফিট স্কিম (সিবিএস)-এ ৪০ হাজার টাকা ঋণ নেন সুসময়। নামে এক স্কীম রয়েছে। এই স্কীমেই ওই ঋণ দেওয়া হয় সুসময়কে। তিনি এই ব্যাঙ্কের গ্রাহক। ব্যাঙ্ক সূত্রে খবর, এখনও ৩৫ হাজার টাকা বকেয়া রেখেছেন সুসময়। শোধ করেননি। এই বকেয়া চাইতেই বুধবার তাঁর বাড়িতে যান ব্যাঙ্কের একদল কর্মী। দলে ছিলেন রিঙ্কু মন্ডল, পিউ বিদ সহ পাঁচজন। অভিযোগ, ব্যাঙ্ক কর্মীদের গালিগালাজ করেন কাউন্সিলর। তাঁদের ধাক্কাধাক্কি করা হয়। বচসাও বাধে। পরিস্থিতি দেখে কাউন্সিলরের বাড়ি থেকে ফিরে আসতে বাধ্য হন ব্যাঙ্কের কর্মীরা।

ব্যাঙ্ক কর্মীদের হেনস্থার কথা মানেননি কল্পনা। তাঁর স্বামী সুসময়েরও দাবি, ‘‘হেনস্থার কোনও ঘটনা ঘটেনি। এটা মিথ্যা অভিযোগ।’’ ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতি তৃণমূলের। ওই কাউন্সিলরও তৃণমূলের। শাসক দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরেই কি এই ঘটনার জল থানা-পুলিশ পর্যন্ত গড়াল, জল্পনা দেখা দিয়েছে শহরে। তবে জেলা তৃণমূলের সভাপতি অজিত মাইতির দাবি, ‘‘ঘটনার ব্যাপারে কিছু জানি না। খোঁজ নিচ্ছি।’’ আর দলের অন্য এক জেলা নেতার মন্তব্য, ‘‘এটা ব্যাঙ্ক আর গ্রাহকের ব্যাপার। সব ঘটনায় দলকে জড়ানো ঠিক নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন