পর্যটক টানতে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে হলদি নদীর পাড়। নিজস্ব চিত্র
সারাদিনের কর্মব্যস্ততার পরে একটু হাঁপ ছাড়ার বা সপ্তাহভর কাজের শেষে সপ্তাহান্তের ছুটিতে একটু মুক্তির স্বাদ পাওয়ার নতুন ঠিকানা হয়ে উঠতে চলেছে হলদিয়া টাউনশিপ।
দু’দিনের ছুটি পেলে বেড়াতে যাওয়ার গন্তব্য হিসাবে দিঘা কিংবা মন্দারমনির আকর্ষণ এখন পুরনো। শিল্পশহর হলদিয়ার টাউনশিপ এলাকায় হলদি নদীর পাড় বরাবর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে তাই এ বার তুলে ধরা হচ্ছে পর্যটক টানতে। বন্দর ও শিল্প শহরের ‘দমবন্ধ’ পরিবেশ থেকে খানিকটা স্বস্তি পেতে ইদানীং হলদি নদীর পাড়ে ভিড় জমাচ্ছেন বহু মানুষ। সেদিকে লক্ষ্য রেখে, হলদিয়া পুরসভার উদ্যোগে হলদি নদীর পাড় বরাবর টাউনশিপের বিস্তীর্ণ এলাকা ঢেলে সাজানো হচ্ছে। রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের আর্থিক সহায়তায় টাউনশিপে প্রস্তাবিত সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডের অদূরে এর জন্য একগুচ্ছ প্রকল্প হাতে নিয়েছে হলদিয়া পুরসভা। হলদি নদীর পাড় কংক্রিট দিয়ে বাঁধিয়ে গোটা অঞ্চল জুড়ে চলছে ‘সৌন্দর্য্যায়ন’।
শুধু নদীর পাড় বাঁধানো নয়, বানানো হচ্ছে ফুটপাথ। সেই সঙ্গে রোদ-ঝড় থেকে রেহাই পেতে ‘স্টে-রুম’ এবং ‘সুলভ শৌচাগার’ গড়ে তোলা হয়েছে। জায়গায় জায়গায় বসানো হয়েছে ‘কৃষক’ থেকে ‘রানার’-এর মডেল। একটি বেসরকারি সংস্থাকে হলদি নদীর পাড় সাজানোর বরাত দিয়েছেন হলদিয়া পুর কর্তৃপক্ষ। ওই সংস্থার পক্ষে অপূর্ব পাঁজা বলেন, ‘‘সাধারণের বিনোদন, যাতায়াত-সহ একাধিক পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে। এতে স্থানীয় মানুষজনের পাশাপাশি ভ্রমণপিপাসুদের মধ্যেও আগ্রহ বাড়বে।
হলদি নদীর পাড়কে এ ভাবে সাজিয়ে তোলা নিয়ে খুশি স্থানীয় বাসিন্দারাও। অনিন্দিতা জানা নামে এক কিশোরীর কথায়, ‘‘নদীর টানে রোজই এখানে আসি। সকাল বিকেল প্রচুর মানুষ নদীর ধারে বেড়ান। তাই পরিকাঠামোর উন্নতি হলে ভ্রমণপ্রিয় মানুষেরা আরও বেশি করে এখানে আসবেন।’’ স্থানীয় বাসিন্দা তাপস কুমার করণ বলেন, ‘‘হলদিয়া-সহ নন্দীগ্রাম–খেজুরিকে নিয়ে পর্যটন হাব গড়ে তুলুক রাজ্য সরকার। যাতে দিঘা ও মন্দারমনির পাশাপাশি এখানেও পর্যটকদের ভিড় বাড়ে।’’
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, হলদি নদী পাড়ে সৌন্দর্য্যায়ন নিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পৃথক কমিটি গড়া হয়েছে। পুরসভার চেয়ারম্যান শ্যামল আদক বলেন, ‘‘এ বছর পুর বাজেটে সৌন্দর্য্যায়য়ের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছিল। তা ছাড়া, হলদিয়ায় নদীর পাড় লাগোয়া এলাকায় পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সৌন্দর্য্যায়ন করা হচ্ছে, যাতে স্থানীয়দের পাশাপাশি বাইরে থেকে পর্যটকেরা এসে ঘুরতে পারেন।’’