ফেসবুকে ছড়িয়েছে এমনই পোস্ট। নিজস্ব চিত্র
কোনও পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘ঝাড়গ্রামের মানুষ বিজেপিকে জেতায়নি, হারিয়েছে আমাদের ঔদ্ধত্যকে’।
কেউ আবার প্রশ্ন তুলেছেন ‘এই ফলের পরেও কী ঝাড়গ্রামের নেতাদের দায়িত্বে থাকা উচিত!’
জঙ্গলমহলে শাসকদলের ফল আশানুরূপ না হওয়ায় নিচুতলার কর্মীদের মধ্যে শুরু হয়েছে জমেছে ক্ষোভ। হতাশ কর্মীদের সেই ক্ষোভের ঢেউ আছড়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার ‘ওয়াল’-এ। ভোটের ফল প্রকাশের রাতেই কর্মীদের হাতে নিগৃহীত হন ঝাড়গ্রাম ব্লকের এক বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা। পঞ্চায়েত পরিচালনা ও টিকিট বিলির ক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্নীতি ও আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ তুলে ওই নেতার দিকে কয়েকজন কর্মী টাকার নোট ছুঁড়ে মারেন বলেও অভিযোগ। নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার দেওয়ালে-দেওয়ালে।
ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের সমস্ত নেতাদের অবিলম্বে পদত্যাগ দাবি করেও পোস্ট দেওয়া হয়েছে। আগামী নভেম্বরে ঝাড়গ্রাম পুরসভার ভোট। তার আগে পঞ্চায়েত স্তরে সার্বিক ভাবে বিজেপি উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় আসন পাওয়ায় কপালে ভাঁজ পড়েছে নেতৃত্বের। দু’টি পঞ্চায়েত সমিতি, ২৪টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখল করেছে বিজেপি। তিনটি জেলা পরিষদ আসনেও বিজেপি জিতেছে। গেরুয়া শিবিরের এই উত্থানের পাশাপাশি, ঝাড়খণ্ড সীমানাবর্তী বেলপাহাড়ি ব্লকের দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করেছে আদিবাসী সমন্বয় মঞ্চের নির্দলরা। কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করতে যোগ্য নেতৃত্বের প্রয়োজন বলেও দাবি করছেন নিচু তলার তৃণমূল কর্মীরা। গোপীবল্লভপুরের এক তৃণমূল কর্মীর অভিযোগ, “পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষমতায় এসে সভাপতি, সহ-সভাপতিরা সিপিএমের অনুজ পাণ্ডেদের মতো বিলাসবহুল জীবনযাপন শুরু করেন। তাই আজ এমন পরিস্থিতি।” ঝাড়গ্রামের এক তৃণমূল কর্মী বলেন, আমাদের তো কোনও দামই নেই। টাকার বিনিময়ে প্রার্থী করা হয়েছে।” ঝাড়গ্রাম জেলার এক প্রবীণ তৃণমূল নেতা বলছেন, “আমাদের ঔদ্ধত্য ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে এটা একটা সতর্কীকরণ!” জেলা তৃণমূলের সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “কিছু ক্ষেত্রে কর্মীদের এই ক্ষোভ ন্যায়সঙ্গত। স্থানীয় কিছু নেতৃত্বের অপদার্থতা, দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের জন্য মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়েছেন। এ বিষয়ে পর্যালোচনা করে দলীয়স্তরে অবশ্যই পদক্ষেপ করা হবে।”