সমায় মান্ডি, সোমা অধিকারী। নিজস্ব চিত্র
ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদ জিতলেও ‘অস্বস্তি’ কাটছে না তৃণমূলের। কারণ, জেলা পরিষদের সভাধিপতি সমায় মান্ডি ও সহ-সভাধিপতি সোমা অধিকারী হেরে গিয়েছেন।
ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের মোট আসন ১৬। এর মধ্যে ১৩টিতে জিতে জেলা পরিষদের ক্ষমতা দখল করেছে তৃণমূল। তবে সমায়বাবু ও সোমাদেবী সহ শাসকদলের তিনজন প্রার্থী বিজেপির কাছে পরাজিত হয়েছেন। গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকের একটি জেলা পরিষদ আসনে সমায়বাবু বিজেপির তুহিনশুভ্র সিংহের কাছে হেরেছেন হাজার দুই ভোটের ব্যবধানে। ওই ব্লকের অন্য একটি জেলা পরিষদ আসনে সোমাদেবীও দুলালি দাসের কাছে হাজার খানেক ভোটের ব্যবধানে হেরেছেন। সাঁকরাইল ব্লকের একটি জেলা পরিষদ আসনে তৃণমূল প্রার্থী হেরেছেন চারশো চল্লিশ ভোটে।
কেন হারলেন? সমায়বাবু ও সোমাদেবী দু’জনেই দাবি করছেন, “নেত্রী উন্নয়ন করবেন। আর তাতেই ভোট হবে এটা হয় নাকি। দলের সংগঠনটাও একটা বড় বিষয়। বিজেপি ঝাড়খণ্ড ও ওডিশা থেকে সশস্ত্র লোকজন এনে ভোট করিয়েছে। ভোটারদের টাকা বিলিয়েছে।” স্থানীয়স্তরে সাংগঠনিক দুর্বলতা ও আত্মতুষ্টিই এই পরাজয়ের কারণ বলে মনে করছেন তাঁরা। জেলা তৃণমূলের সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “বিজেপি গুন্ডামি করে সমায়বাবু ও সোমাদেবীকে হারিয়ে দিয়েছে। সাংগঠনিক কিছু ত্রুটি বিচ্যুতিও আছে। সব পর্যালোচনা করে দেখা হবে।” বিজেপির ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি সুখময় শতপথীর অবশ্য দাবি, “জঙ্গলমহলের মানুষ খুবই স্পর্শকাতর। উন্নয়নের ফাঁকা আওয়াজ তাঁরা বুঝে গিয়েছিলেন।’’
এ বার জিতলেও সংরক্ষণের জন্য সভাধিপতি হওয়ার সুযোগ ছিল না সমায়বাবুর। প্রথমে ঠিক ছিল তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। কারণ, সমায়বাবুর নিজের এলাকা সাঁকরাইল ব্লকের আসনটি সংরক্ষণের কোপে পড়েছিল। পরে অবশ্য দলের নির্দেশে গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকে জেলা পরিষদের ১ নম্বর আসনে মনোনয়ন দাখিল করেন তিনি। সোমাদেবীর নিজের এলাকা বেলিয়াবেড়ার আসনে এ বার অন্য এক নেতাকে টিকিট দেয় দল। সেজন্য সোমাদেবীকেও গোপীবল্লভপুর ১ ব্লকের ২ নম্বর জেলা পরিষদ আসনে দাঁড়াতে হয়।
সুখময়বাবুর দাবি, ‘‘জঙ্গলমহলের মানুষ দুর্নীতি, বৈষম্য ও স্বজনপোষণের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছিলেন। কিন্তু ব্যাপক ছাপ্পার ফলে জনাদেশের প্রতিফলন ঘটল না।” যদিও অজিতবাবুর জবাব, ‘‘ছাপ্পার অভিযোগ ভিত্তিহীন। বিজেপিই বাইরে থেকে সশস্ত্র দুষ্কৃতী এনেছিল।’’