প্রচারের ফাঁকে নাতনির সঙ্গই অবসর অজিতের

বছর ছয়েক আগে হার্টের বাইপাস সার্জারি হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মাত্রাতিরিক্ত পরিশ্রম চলবে না। কিন্ত তা আর হচ্ছে কই। 

Advertisement

দেবমাল্য বাগচী

শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৮ ০১:১৫
Share:

ভোট প্রচারে বেরনোর আগে মাদপুরের বাড়িতে অজিত মাইতি। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

সকাল সাড়ে আটটা। ঘুম থেকে উঠে নিজের বাড়ির চেম্বারে গিয়ে বসলেন। সামনে ভিড় করে জনা পনেরো লোক। বাড়ির সামনে দিয়ে যাচ্ছে মিছিল। স্লোগান উঠছে, ‘এলাকার উন্নয়নে অজিত মাইতিকে বিপুল ভোটে জয়ী করুন’। স্লোগান শুনে হাসির ঝিলিক মুখে। তবে কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই উধাও হল সে হাসি। চেম্বারে অপেক্ষারত এক কর্মীর কথা শুনেই চড়া সুরে অজিতবাবু বলে উঠলেন, ‘‘আমি এসব বরদাস্ত করব না। নিজেদের সামান্য সমস্যা নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি কেন হবে!”

Advertisement

বছর ছয়েক আগে হার্টের বাইপাস সার্জারি হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মাত্রাতিরিক্ত পরিশ্রম চলবে না। কিন্ত তা আর হচ্ছে কই।

পঞ্চায়েত ভোটে দু-দু’টি জেলার দায়িত্ব তাঁর কাঁধে। ঝুট-ঝামেলা সামাল দিতে দিতে মাঝেমধ্যে মাথা ঠান্ডা রাখতে পারছেন না পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলার তৃণমূল সভাপতি অজিত। পরিবেশ উত্তপ্ত হলে এগিয়ে আসছেন স্ত্রী মঞ্জু। কখনও মনে করিয়ে দিচ্ছেন ওষুধ খাওয়ার কথা। কখনও এগিয়ে দিচ্ছেন শরবতের গ্লাস। খড়্গপুর-২ ব্লকের সদর মাদপুরে তাঁর বাড়িতে এ ভাবে কর্মী-সমর্থকদের সামলাচ্ছেন অজিতবাবু।

Advertisement

সকালের পর্ব শেষ হতে না হতেই নাকে-মুখে গুঁজেই ছুটতে হচ্ছে দুই জেলার বিভিন্ন প্রান্তে। সঙ্গে রাখছেন একটি অতিরিক্ত পাঞ্জাবি। কিন্তু নিজের বাড়ি এলাকার জেলা পরিষদ আসনে তো তিনি নিজে প্রার্থী হয়েছেন। তাঁর প্রচার সামলাচ্ছে কে? অজিতবাবুর কথায়, ‘‘আমি নই, মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়ন এখানে প্রার্থী। তাই দলের কর্মীরাই সব সামলে নেবে।’’ অজিতবাবুর বিরুদ্ধে লড়ছেন সিপিএম, বিজেপি এবং কংগ্রেস প্রার্থীরা। তবে সিপিএমকেই প্রতিপক্ষ দাবি করে অজিতবাবু বলছেন, “আমার আসনে লড়াই হোক। কারণ, আমি গণতান্ত্রিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিশ্বাসী। আসলে উন্নয়নের ছোঁয়া পাওয়া মানুষের ভোটে জয় নিশ্চিত। এখন ব্যবধান বাড়ানোই লক্ষ্য।”

নিজের কেন্দ্র নিয়ে নিশ্চিন্ত। কিন্তু বাকি জায়গায়? জেলা জুড়ে বিভিন্ন আসনে তৃণমূলের গোঁজ প্রার্থীর অভাব নেই। অজিতবাবুর জবাব, ‘‘মাত্র আড়াই বছরে দলের জেলা সভাপতি হিসাবে সর্বত্র হয়তো সমানভাবে নজর দিতে পারিনি। যেখানে আমি সর্বক্ষণ নজর দিয়েছি সেখানে গোঁজ নেই।”

সব ঝক্কি মিটিয়ে অজিতবাবু বাড়ি ফিরছেন রাত ১১টায়। তারপর ফোনপর্ব সেরে শুতে শুতে রাত ১টা। এরই মাঝে কখনও একটু বেশি সময় বাড়িতে থাকলে নজর রাখছেন টেলিভিশনের পরদায়। নাতনির সঙ্গে চলছে খুনসুঁটিও। শাসকের দুই জেলার ভোট সেনাপতির একমাত্র বিশ্রাম যে সেখানেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement