Successful in WBCS

সিভিল সার্ভিসে সফল দর্জির ছেলে

গ্রামের নয়াগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়াশোনার পর বিনপুর হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিলেন জাহির।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বিনপুর শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০২৩ ০৫:৩৯
Share:

বাবার সঙ্গে জাহির। —নিজস্ব চিত্র।

টানা আট বছরের ধৈর্য এবং নিরলস চেষ্টার সাফল্য পেলেন বিনপুর থানার নয়াগ্রামের যুবক শেখ জাহির আব্বাস। সম্প্রতি ওয়েস্ট বেঙ্গল সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় ‘এ ক্যাটাগেরি’তে চাকরি পেয়ে নজির কেড়েছে জাহির। টিউশন পড়িয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি সংসারের খরচও জুগিয়েছেন তিনি। তাঁর সাফল্যে খুশি গোটা গ্রাম।

Advertisement

গ্রামের নয়াগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়াশোনার পর বিনপুর হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিলেন জাহির। তারপর পশ্চিম মেদিনীপুরের মাড়াতলা সাহাবুদ্দিন মডেল স্কুলে নবম-দশম ও হাওড়া জেলার বাগনানের মৌলানা আজাদ অ্যাকাডেমিতে বিজ্ঞান বিষয়ে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়াশোনা করেন তিনি। পরে মেদিনীপুর ডে কলেজ থেকে ২০১৫ রসায়ন অনার্স নিয়ে স্নাতকস্তর পর্যন্ত পড়াশোনা করেন তিনি। তারপর জাহির স্নাতকোত্তরে পড়াশোনা করেননি। তাঁর লক্ষ্য ছিল সিভিল সার্ভিস।

শুরু হয় লড়াই। কিন্তু পরিবারে আর্থিক অনটনের জেরে ২০১৯ সাল থেকেই টিউশন পড়ানো শুরু করেন তিনি। ২০১৯ সালে ‘মিসলেনিয়াস’ ও ২০২০ সালে ‘ডব্লিউবিসিএস’ পরীক্ষায় পাশ করলেও ইন্টারভিউতে পাশ করতে পারেননি। এ বার অবশ্য সব বাধা জয় করে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় ‘এ ক্যাটাগেরি’তে অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অফ রেভেনিউ সার্ভিসে চাকরি পেয়েছেন। শেখ জাহিরের বাবা শেখ সেলিম পেশায় দর্জি। কোনও মতে চলে সংসার। তবে এখন সংসারের খরচ সামলান জাহিরই। অ্যাজবেস্টসের ছাউনি দেওয়া মাটির বাড়িতে বসবাস তাঁদের। জাহিরের মা মলিদা বিবি গৃহবধূ। সেলিম ও মলিদার দুই ছেলে ও এক মেয়ে। বউ ছেলে জাহির। বড় ছেলে জাহির। ছোট ছেলে শেখ সাহিদ কলকাতায় জরির কাজ করেন। চাকরি পাওয়ার পর গ্রামে জাহির আসতেই মাটির বাড়িতে বেলুন ও ফুল সাজিয়ে তুলেছেন আত্মীয়েরা। জাহিরের কথায়, ‘‘সরকারি চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে অসীম ধৈর্য ও কঠোর পরিশ্রম করা প্রয়োজন।’’ জাহিরের বাবা শেখ সেলিম বলছিলেন, ‘‘এই চাকরির আনন্দ বলে প্রকাশ করা যাবে না।’’

Advertisement

অন্য দিকে, ঝাড়গ্রাম শহরের রঘুনাথপুর এলাকার বাসিন্দা মনীষা মান্ডিও সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় ‘এ ক্যাটাগেরি’তে অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অফ রেভেনিউ সার্ভিসে চাকরি পেয়েছেন। রানী বিনোদমঞ্জরী হাইস্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার রসায়ন নিয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাশ করেন। ২০১৮ সাল থেকে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করেন মনীষা। এর আগে ২০২০ সালে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় ‘গ্রুপ সি’ পাশ করেছিলেন। গত ১৮ অগষ্ট মনীষা ঝাড়গ্রামের ক্রেতা সুরক্ষা দফতরে কনজ়িউমার ওয়েলফেয়ার অফিসার হিসেবে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। মনীষার বাবা জীতেন্দ্রনাথ মান্ডি অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ক ম্যানেজার। মনীষার কথায়, ‘‘প্রশাসনে কাজ করার প্রথম থেকেই ইচ্ছে ছিল। ইচ্ছেটা পূরণ হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন