গেরুয়ার সহায় সর্বধর্ম

২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পরে দেশ জুড়ে মোদী- হাওয়াকে কাজে লাগাতে মিসড কলের মাধ্যমে সদস্য সংগ্রহ করেছিল বিজেপি।

Advertisement

বরুণ দে

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৯ ০১:১০
Share:

প্রতীকী ছবি।

এ বার শুধু মিসড কল নয়, বিজেপির সদস্যপদ পেতে গেলে ফর্মপূরণও করতে হচ্ছে। সেই ফর্মে পাঁচটি নীতি মেনে চলার অঙ্গীকার করতে হচ্ছে। তার মধ্যে সর্বধর্ম সমভাবের নীতিও রয়েছে।

Advertisement

২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পরে দেশ জুড়ে মোদী- হাওয়াকে কাজে লাগাতে মিসড কলের মাধ্যমে সদস্য সংগ্রহ করেছিল বিজেপি। যদিও মিসড কলে যাঁরা সদস্য হয়েছিল তাঁদের বেশিরভাগকেই দলের মিটিং-মিছিলে পাওয়া তো দূরের কথা, বাস্তবে চোখেও দেখা যায়নি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ফের নতুন করে সদস্য সংগ্রহ শুরু করেছে বিজেপি। তবে এ বার নিয়ম আলাদা। দলের এক সূত্রে খবর, কেউ সদস্য হতে চাইলে তাঁকে ফর্মে সদস্যের নাম, ফোন নম্বর, ই মেল, বুথ নম্বর-সহ বিভিন্ন তথ্য নথিভুক্ত করতে হচ্ছে। পাশাপাশি, দলের স্থানীয় যে নেতা তাঁকে দলে নেওয়ার ক্ষেত্রে ‘অনুমোদন’ দিচ্ছেন, সেই নেতার নামও নথিভুক্ত করতে হচ্ছে। করতে হচ্ছে সর্বধর্ম সমভাব-সহ পাঁচটি নীতি মেনে চলার অঙ্গীকার। যিনি সদস্য হতে ইচ্ছুক, তিনি বিজেপির পুরনো কর্মী কি না তাও জানাতে হচ্ছে ফর্মে।

দলের এক সূত্রে খবর, সদস্য ফর্মের উপরেই লেখা রয়েছে, ‘আমি ভারতীয় জনতা পার্টির সদস্য হবার জন্য আবেদন করছি। ভারতীয় জনতা পার্টির ‘পঞ্চনিষ্ঠ’ নীতি মেনে চলব।’ কী এই ‘পঞ্চনিষ্ঠ’? জেলা বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘একাত্ম মানববাদের আধার এই পঞ্চনিষ্ঠা।’’ ওই সূত্রে খবর, এই পাঁচটি নীতি হল এক, নীতিনিষ্ঠ রাজনীতি। দুই, বিকেন্দ্রিত অর্থনীতি। তিন, সর্বধর্ম সমভাব। চার, গণতন্ত্র ও পাঁচ, জাতীয়তাবাদ ও জাতীয় সংহতি।

Advertisement

এ রাজ্যেই ‘জয় শ্রী রাম’ না বলায় মারধরের একাধিক অভিযোগ রয়েছে বিজেপির বিরুদ্ধে। ধর্ম নিয়ে বিজেপির রাজনীতি নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই সোচ্চার হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বাংলায় ‘ধর্ম আমার, ধর্ম তোমার, উৎসব সবার’- কে কার্যত স্লোগানের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছেন তিনি। এই পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপির সদস্য ফর্মে সর্বধর্মের সমভাবের নীতির কথা উল্লেখ রাখা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশ বলেন, ‘‘সংগঠনের জন্যই আমরা লোকসভায় এত ভাল ফল করেছি। আমরা সংগঠনকে আরও অনেক দূর পর্যন্ত নিয়ে যেতে চাইছি। আমরা জানি, আমরা পারব।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘বিজেপি কখনও ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে না। তৃণমূল এ নিয়ে কুৎসা- অপপ্রচার করে। মানুষ যে বিজেপির সঙ্গে রয়েছেন, লোকসভার ফলেই তা স্পষ্ট হয়েছে।’

এই নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না তৃণমূল। দলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতির খোঁচা, ‘‘বিজেপির মুখে সর্বধর্মের কথা? মানুষ যা বোঝার বুঝছেন! ওরা তো শুধু রাম- নাম করে রাজনীতি করে। বিভাজনের রাজনীতি করে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন