প্রধানমন্ত্রীকে সামনে রেখেও ঘুচল না দ্বন্দ্ব  

মঙ্গলবার সকালে খড়্গপুর শহরের রাম মন্দিরে নরেন্দ্র মোদীর জন্মদিন পালন হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:১২
Share:

অনুষ্ঠানে প্রদীপ। নিজস্ব চিত্র

খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্মদিন। সেই উপলক্ষে অনুষ্ঠান। রেলশহরে সেই অনুষ্ঠানেও চাপা থাকল না বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল।

Advertisement

মঙ্গলবার সকালে খড়্গপুর শহরের রাম মন্দিরে নরেন্দ্র মোদীর জন্মদিন পালন হয়। কর্মসূচি পালনের আসল উদ্যোক্তা কে বা কারা সেই নিয়ে শুরু হয়েছে টানাপড়েন। বিজেপির দাবি, রাম মন্দিরে দলের উদ্যোগেই ওই কর্মসূচি পালিত হয়েছে। বিজেপির জাতীয় পরিষদের প্রাক্তন সদস্য আবার প্রদীপ পট্টনায়েকের দাবি, তাঁর ব্যক্তিগত উদ্যোগেই অরাজনৈতিকভাবে ওই কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। সেখানে কোনও রাজনৈতিক ব্যানারও ছিল না। সেখানে দুই মণ্ডল সভাপতি ছাড়া বিজেপির পরিচিত নেতাদেরও দেখা যায়নি।

রেলশহরে বিজেপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে পরিচিত প্রবীণ বিজেপি নেতা প্রদীপ পট্টনায়েক বলেন, ‘‘আমি স্যোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে সকলকেই রামমন্দিরে দেশের প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে আসতে অনুরোধ করেছিলাম। সাংসদ হিসাবে দিলীপ ঘোষকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। তিনি আসতে পারবেন না বলে আগেই জানিয়েছেন। পুরনো কয়েকজন নেতা-কর্মী ও অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের নিয়ে এই কর্মসূচি পালন করেছি।”

Advertisement

প্রায় দু’বছর ধরে প্রদীপকে দলের কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছে না। গত লোকসভা নির্বাচনের আগেও দিলীপ ঘোষ-সহ দলের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন তিনি। তবে দলত্যাগ করেননি। ব্যক্তিগত উদ্যোগেই শহরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন তিনি। এ দিন শহরের রামমন্দিরের অনুষ্ঠানে যজ্ঞের আয়োজনও ছিল। ছিল না কোনও রাজনৈতিক ব্যানার। সেখানে ছিলেন বিজেপির মধ্য মণ্ডলের সভাপতি পি সোমনাথন, উত্তর মণ্ডলের সভাপতি অভিষেক অগ্রবাল, পুরনো দিনের জেলা নেত্রী রিনা সিংহ, সঞ্জয় শর্মার মতো কয়েকজন। প্রদীপ পট্টনায়েক বলেন, “প্রধানমন্ত্রী সকলের। তাই তাঁর জন্মদিন পালনের অনুষ্ঠানে যাতে সবাই সামিল হতে পারে তাই যোগ সমিতির মাধ্যমে অরাজনৈতিকভাবে অনুষ্ঠান করেছি। সেখানে সরকারি চাকুরিজীবী থেকে রাজনৈতিক নেতারা এসেছিলেন।” দলের নেতাদের ডাকেননি? প্রদীপের জবাব, “খড়্গপুর শহরের বিজেপির নেতাদের আলাদা করে বলার প্রয়োজন মনে করিনি। কারন তাঁরা বিজেপির কোনও কর্মসূচিতে আমাকে ডাকেন না।”

এমন ঘটনায় দলের গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। তবে গরহাজির থাকা বিজেপি নেতাদের অবশ্য দাবি, রাম মন্দির এলাকার কর্মসূচি আসলে দলেরই কর্মসূচি। বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি তথা খড়্গপুর শহরের বাসিন্দা গৌতম ভট্টাচার্য বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে আমরা শহরে নানা কর্মসূচি করেছি। রাম মন্দিরে সকালে দলের পক্ষ থেকে হোমযজ্ঞ হয়েছে। আমার অন্য কাজ থাকায় রাম মন্দিরে যেতে পারিনি।” কর্মসূচিতে না এলেও শহরের বাসিন্দা বিজেপির জেলা নেতা প্রেমচাঁদ ঝারও দাবি, “রাম মন্দিরে আমাদের দলের পক্ষ থেকেই প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন পালন হয়েছে।” কিন্তু সে তো প্রদীপ পট্টনায়েক অরাজনৈতিকভাবে আয়োজন করেছিলেন? এ বার প্রেমচাঁদের জবাব, “প্রদীপ পট্টনায়েক তো দলেরই লোক।”

এ কথা শুনে প্রদীপ পট্টনায়েক হেসে বলেন, “দলের লোক বলেই হয়তো আমরা কয়েকজন পুরনো কর্মী দলেরই অনুষ্ঠানে ডাক পাই না!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন