তমলুকের সোনামুইয়ে শিবিরে বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্র। নিজস্ব চিত্র।
একশো দিনের কাজে প্রকল্পে শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা মেটানোর কথা ঘোষণা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই টাকা দিতে শ্রমিকদের তথ্য সংগ্রহে রবিবার থেকে শুরু হয়েছে সহায়তা শিবির। নন্দীগ্রামে ওই শিবিরের কথা এলাকায় এলাকায় প্রচারে গিয়ে শাসকদলকে বাধার মুখে পড়তে হয়েছে বলে অভিযোগ। তৃণমূল এবং বিজেপি কর্মীদের মধ্যে সৃষ্ট উত্তেজনার পরেও এ দিন মহম্মদপুরে শিবির হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রের খবর।
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মতো এ দিন থেকে জেলার বিভিন্ন পঞ্চায়েতে শিবির শুরু করে শাসকদল। ওই শিবিরে শ্রমিকেরা আবেদন জানাতে পারবেন। নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ১০টি এবং নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের সাতটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় পৃথকভাবে সহায়তা শিবির খোলা হয়। এলাকায় টোটো নিয়ে প্রচার চলে। তৃণমূলের দলীয় পতাকা লাগানো একটি টোটো মহম্মদপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের মহম্মদপুর বাজারে মাইক লাগিয়ে প্রচার চালাচ্ছিল। সে সময় বিজেপি কর্মীরা টোটো আটকে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের অভিযোগ, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন এভাবে মাইকে বাজিয়ে প্রচার চালানোয় পরীক্ষার্থীদের অসুবিধা হবে।
বিক্ষোভের সময় এলাকায় যান বিজেপির স্থানীয় মণ্ডল সভাপতি অমল ঘড়া। তিনি বলেন, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার মরসুমে লাউড স্পিকার বাজিয়ে প্রচার করা হচ্ছিল। তাই পরীক্ষার্থীদের যাতে অসুবিধে না হয় তার জন্য সকলে মিলে প্রতিরোধ করেছি।’’ অমলের কথায়, ‘‘শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছে তৃণমূল। একশো দিনের কাজের প্রকল্পে ভুরিভুরি দুর্নীতি করায় কেন্দ্রীয় সরকার বাধ্য হয়ে অর্থ বরাদ্দ করেনি। এখন নিজেদের চুরি ঢাকাতে জনগণের দেওয়া করের টাকা থেকে রাজ্য সরকার শ্রমিকদের টাকা দেবে বলেছে তৃণমূল সরকার।’’
দীর্ঘক্ষণ টোটো আটকে থাকার অভিযোগ পেয়ে সেখানে যান নন্দীগ্রাম-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ। তিনি অমলের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়ান। রাজ্য সরকারের তহবিলের অর্থ থেকে শ্রমিকদের মজুরি দেওয়া হলেও কেন তৃণমূল এভাবে মাইক বেঁধে প্রচার করছে তা নিয়েই মূলত চলে বচসা। বাপ্পাদিত্য অবশ্য বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাকে ভাতে মারার চক্রান্ত করেছে। মুখ্যমন্ত্রী সেই চক্রান্তকে রুখে দিয়ে মানুষের পাশে থাকার নিরন্তর চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তাই দিশেহারা বিজেপি আমাদের দলের প্রচার গাড়িকে আটকে রেখেছিল।’’ বিক্ষোভের খবর পেয়ে পরে নন্দীগ্রাম থানা থেকে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ওই পঞ্চায়েত এলাকায় এদিন শিবির অবশ্য হয়েছে। পরে প্রচার বন্ধ রাখা হয়। নন্দীগ্রামের দু’টি ব্লকের আর কোথাও শিবির ঘিরে অশান্তি হয়নি।