তাণ্ডবের চিহ্ন জেলা পরিষদের অফিসে। নিজস্ব চিত্র
তিনদিন ধরে নিখোঁজ এক কিশোরের মৃতদেহ উদ্ধার হল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদ অফিস চত্বরে একটি কুয়ো থেকে। বৃহস্পতিবার সকালে তমলুকের নিমতৌড়ি এলাকায় ওই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায়। ক্ষুদ্ধ জনতা জেলা পরিষদ অফিসে ভাঙচুরও করে। পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম শেখ সোহেল (১৪)। তার বাড়ি চণ্ডীপুরে। সে সেখানে মায়ের সঙ্গে থাকত। তবে সোহেলের মা মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় সম্প্রতি সে তমলুকের গণপতিনগরে মামার বাড়িতে থাকত।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোহেল গত মঙ্গলবার মামার বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। তারপর থেকে তার আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। তমলুক থানায় এই বিষয়ে অভিযোগও দায়ের হয়। বৃহস্পতিবার সকালে নিমতৌড়ি এলাকায় নব নির্মিত জেলা পরিষদ অফিস চত্বরে একটি নির্মীয়মাণ ভবনের পাশে সদ্য খোঁড়া কুয়ো থেকে দুর্গন্ধ পান স্থানীয় লোকজন। খোঁজ করতে গিয়ে দেখা যায়, কুয়োর ভিতরে ওই কিশোরের দেহ পড়ে রয়েছে।
সোহেলকে খুন করা হয়েছে, এই দাবি জানিয়ে স্থানীয় গ্রামবাসীরা ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার চেয়ে হলদিয়া-মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে। পরে ক্ষুদ্ধ জনতা নির্মীয়মাণ ভবনের কাছে থাকা ঠিকাদার সংস্থার শ্রমিকদের অস্থায়ী ঘরে এবং জেলা পরিষদ অফিসের ভবনে ঢুকে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ।
জেলা পরিষদ অফিসে ভাঙচুর করার সময় অফিসের কর্মী-আধিকারিকরা ভিতরে ছিলেন। ওই ঘটনার জেরে তাঁদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। উপযুক্ত তদন্তের আশ্বাস দিয়ে দেহ উদ্ধার করে তারা তা ময়নাতদন্তের জন্য তমলুক জেলা হাসপাতালে পাঠায়।
গ্রামবাসীদের একাংশের বক্তব্য, জেলা পরিষদ অফিস চত্বরে বিভিন্ন নির্মাণ কাজ চলছে। সেখান থেকে নির্মাণ সামগ্রী চুরি যাচ্ছিল বলে অভিযোগ উঠছিল। ওই সব ঘটনার সঙ্গে কিশোরের মৃত্যুর ঘটনার যোগ থাকতে পারে বলে গ্রামবাসীদের দাবি।
পুলিশ জানিয়েছে, অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে মামলা দায়ের করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। জেলা পরিষদ অফিসে ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের ধরতে তল্লাশি শুরু করা হয়েছে।