বাবার মৃত্যুদিনে দিঘায় মৃত ছেলে

পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম আজহার আলি। তিনি কলকাতার কড়েয়া থানার পি-৪০ কড়েয়া রোড়ের বাসিন্দা। ট্যাংরা এবং কড়েয়া এলাকার কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে গত ১৮ জুন দিঘায় বেড়াতে এসেছিলেন আজহার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দিঘা শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৮ ০১:৩৯
Share:

ঘটনাস্থলে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

এক বছর আগে ১৯ জুন মৃত্যু হয়েছিল বাবার। বছর ঘুরে এবার ওই দিনেই সমুদ্রে ডুবে মৃত্যু হল ছেলের। দিঘার ওই ঘটনায় ফের উঠে এসেছে নিরাপত্তা এবং নজরদারির প্রশ্ন।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম আজহার আলি। তিনি কলকাতার কড়েয়া থানার পি-৪০ কড়েয়া রোড়ের বাসিন্দা। ট্যাংরা এবং কড়েয়া এলাকার কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে গত ১৮ জুন দিঘায় বেড়াতে এসেছিলেন আজহার। পরের দিন সকাল ৮টা নাগাদ ওল্ড দিঘার ২ নম্বর ঘাটে বন্ধুদের সঙ্গে সমুদ্রে স্নান করতে নেমেছিলেন তিনি। ওই সময় সমুদ্রে জোয়ার চলছিল।

পুলিশকে আজহারের বন্ধুরা জানিয়েছেন, ওই দিন আজহার এবং তাঁদের আর এক বন্ধু সমুদ্রের বেশ কিছুটা গভীরে চলে যান। হঠাৎ একটা বড় ঢেউ এলে তলিয়ে যান আজাহার। বন্ধুরাই খবর দেন দিঘা থানায়। খবর পাওয়ার পর থেকেই নুলিয়া এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ওল্ড দিঘা থেকে নিউ দিঘা পর্যন্ত সমুদ্রে তল্লাশি চালায়। কিন্তু ওই দিন আজাহারকে পাওয়া যায়নি।

Advertisement

বুধবার সকাল ১০টা নাগাদ ওল্ড দিঘার বিশ্ববাংলা ঘাটের কাছে আজাহারের দেহ ভেসে আসতে দেখেন নুলিয়ারা। তাঁরাই তাঁর দেহ উদ্ধার করেন। মঙ্গলবার রাতেই দিঘা চলে আসেন আজহারের মামা জাভেদ আখতার। এ দিন তিনিই মৃতদেহ শনাক্ত করেন। তার পরে আজাহারের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।

ইতিমধ্যে পুলিশ আজহারের বন্ধুদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, এক বছর আগে ১৯ জুন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল আজহারের বাবা আলমগীর আলির। কড়েয়া রো়ডের এক চিলতে ঘরে মায়ের সঙ্গে থাকতেন আজাহার। স্নাতক আজহার মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভের কাজ করতেন। আজহারের মৃত্যুতে শোকের ছায়া কড়েয়া রোড এলাকায়। এক বছরের মধ্যে স্বামী এবং সন্তান হারিয়ে শোকগ্রস্ত আজহারের মা। আপাতত তিনি বাপের বাড়িতে রয়েছেন।

পাখি পোষা, অ্যাকোয়ারিয়ামে মাছ রাখা শখ ছিল তাঁর। এ দিন বিকেলে আজাহারের বাড়ির দরজার সামনে দেখা গেল, খাঁচার মধ্যে রয়েছে তাঁর পোষা পাখি। আজহারের ভাই শেখ শামসুদ্দিনের কথায়, ‘‘মাস দুয়েক আগে শখ করে আজহার পাখিগুলি এনেছিল। নিয়ম করে খাবার দিত।’’

আজহারের বাড়ির পাশেই থাকেন তাঁর আত্মীয় শেখ শামসুদ্দিন, পিসি আকবরি বেগমরা। আকবরির কথায়, ‘‘ইদের দিনে সবাই মিলে আনন্দ করলাম। মঙ্গলবার সকালে দিঘা থেকে ওর বন্ধুদের কাছে দুঃসংবাদটা পাই। কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না যে ও আর নেই।’’

উল্লেখ্য, মঙ্গলবারই দিঘায় সমুদ্রে তলিয়ে যেতে গিয়ে বেঁচেছেন হাওড়ার বড়গাছিয়ার মল্লিকপাড়ার বাসিন্দা শেখ কাশেম আলি। জগন্নাথ ঘাটে তিনি জলে নেমেছিলেন। তাঁকে উদ্ধার করেন নুলিয়ারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন