অকুস্থলে: তমাল নদীর ভাঙা বাঁধ পরিদর্শন। নিজস্ব চিত্র
জলের তোড়ে সেতু ভেঙে বিপত্তি দেখা দিয়েছে কেশপুরের আনন্দপুরে। বন্ধ হয়ে গিয়েছে আনন্দপুর-সাহসপুর বাস যোগাযোগ। ফলে, আশেপাশের এলাকার বহু মানুষ সমস্যায় পড়েছেন। ভাঙা সেতু মেরামত না হলে বাস চলাচল শুরু করা অসম্ভব। সে ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার ঝুঁকি থেকে যাবে।
পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার এলাকায় যান জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরি। সঙ্গে ছিলেন জেলার বাস্তুকারেরা। ঠিক হয়েছে, আপাতত সেতুর ভাঙা অংশ মেরামত করা হবে। পরে পুরনো সেতুর পাশে নতুন একটি সেতু তৈরিরও ব্যবস্থা করা হবে। পরে শৈবালবাবু বলেন, “এই সেতু জলের নীচে চলে গিয়েছিল। দিন কয়েক সেতুর উপর দিয়েই জল বয়েছে। বাস চলাচল বন্ধ তখনই থেকে। জল নামার পর দেখা যায়, সেতুর একাংশ ভেঙে গিয়েছে।’’ তাঁর আশ্বাস, “আপাতত সেতুর ভাঙা অংশ মেরামত করা হবে। পরে পুরনো সেতুর পাশে নতুন একটি সেতু তৈরির পরিকল্পনা করা হবে। আমরা প্রকল্প তৈরি করে রাজ্যের কাছে পাঠিয়ে দেবো। অর্থ মিললেই কাজ শুরু হবে।’’ নতুন সেতু তৈরির অর্থ কে দেবে, সেই নিয়ে অবশ্য সংশয় রয়েছে। জেলা পরিষদের এক কর্তার অবশ্য আশা, “অর্থের সংস্থান ঠিক হয়ে যাবে!”
ভারী বৃষ্টিতে তমাল নদীর দু’কূল উপচে কেশপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা ক’দিন ধরেই জলমগ্ন। বৃহস্পতিবারও বিভিন্ন এলাকায় জল ছিল। আনন্দপুরের বহু এলাকাও জলের তলায় চলে গিয়েছিল। দিন কয়েক আগে এই সেতুর উপরে জল উঠে যায়। সমস্যার শুরু তখনই থেকে। আশপাশের এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ ভেঙে কার্যত ভেঙে পড়ে। সাহসপুর, কানাশোল প্রভৃতি এলাকায় যেতে এই সেতুই ভরসা। দিন কয়েক আগে এই সেতু পেরোতে গিয়ে দুর্ঘটনাও ঘটে। মোটরবাইকে জলের উপর দিতে সেতু পেরোতে গিয়ে উল্টে যান দুই যুবক। স্থানীয় কয়েকজন তাঁদের উদ্ধার করেন। বাইকটি অবশ্য জলে ভেসে গিয়েছে।
তমাল নদীর এই সেতুতে অজস্র ফাটল রয়েছে। যে কোনও সময় বড় বিপর্যয় ঘটতে পারে। অবশ্য কারও হেলদোল নেই। বেহাল সেতু দিয়েই দিব্যি চলে বাস-লরি পারাপার। স্থানীয়রা মানছেন, সেতুর অবস্থা দেখে মাঝেমধ্যেই ভয় হয়। তবে যোগাযোগের অন্য কোনও রাস্তা না থাকায় বাধ্য হয়েই এলাকাবাসী এই সেতু দিয়ে পারাপার করেন। জেলার পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরি অবশ্য বলেন, “এই সেতুর উপর দিয়ে আর ভারী যানবাহন চলবে না। এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে।’’ তিনি জানান, বাসও খালি অবস্থায় সেতু পেরোবে। যাত্রীরা এক প্রান্তে নেমে আবার অন্য প্রান্তে গিয়ে বাসে উঠবেন।