চোখের সামনের বোনকে কুপিয়ে খুন, আটক তুতো দাদা

বুধবার কাঁথির আঠিলাগড়ির ওই ঘটনায় আহত কিশোরীকে অবশ্য বাঁচানো যায়নি। হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরে মারা যায় সে। তবে ম়ৃত কিশোরীর দাদার তৎপরতায় আটক হয়েছে অভিযুক্ত।   

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৮ ০১:৩০
Share:

অভিযুক্ত: জয়দেব রানা। —নিজস্ব চিত্র।

বোনকে ছুরি মেরে পালিয়ে যাচ্ছে জেঠতুতো দাদা। চোখের সামনে সেই দৃশ্য দেখে চুপ থাকতে পারেনি বছর চোদ্দ-পনেরোর এক কিশোর। কয়েকঘণ্টা পরেই শুরু হবে তাঁর ভূগোলের পরীক্ষা, কিন্তু তা ভুলে সে ঝাঁপিয়ে পড়ে বোনের হামলাকারীকে ধরতে। ধস্তাধস্তিতে গভীরভাবে কেটে যায় বাঁ’হাতের আঙুল। তবুও হামলাকারীকে আটক করেছে সে। পরে পরীক্ষাও দিয়েছে।

Advertisement

বুধবার কাঁথির আঠিলাগড়ির ওই ঘটনায় আহত কিশোরীকে অবশ্য বাঁচানো যায়নি। হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরে মারা যায় সে। তবে ম়ৃত কিশোরীর দাদার তৎপরতায় আটক হয়েছে অভিযুক্ত।

স্থানীয় সূত্রের খবর, অভিযুক্ত বছর পঁচিশের জয়দেব রানা মারিশদা থানার দইসাই গ্রামের বাসিন্দা। এ দিন সকালে সে আঠিলাগড়িতে কাকা বলাই রানার বাড়িতে যায়। সে সময় বলাইবাবু বাড়িতে ছিলেন না। কাকার বাড়িতে জয়দেব কাকিমা মীনাক্ষী রানার কাছে ভাত খেতে চায়। কিন্তু সেই সময় ছেলে মহাদেব মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে যাচ্ছে বলে জয়দেবকে কিছুক্ষণ পরে আসতে বলেন মীনাক্ষীদেবী। অভিযোগ, এর পরে সিঁড়ি দিয়ে নীচে নামার সময় জয়দেব মীনাক্ষীদেবীর মেয়ে মুনমুনকে (১৫) ছুরি দিয়ে আঘাত করে। তার চিৎকার শুনে ছুটে যায় মহাদেব। সে ঝাপটে ধরে জয়দেবকে।

Advertisement

মীনাক্ষাদেবীর বাড়িতে ভাড়া থাকেন বিহারের বাসিন্দা বিনীত জৈন। ঘটনার সময় তিনি বাজার করে ফিরছিলেন। পালানোর চেষ্টা করলে তিনিও জয়দেবকে ধরে ফেলেন। এলাকাবাসী জয়দেবকে ধরে বেধড়ক মারধর করে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জয়দেবকে উদ্ধার করে আটক করে। স্থানীয়েরা গুরুতর আহত মুনমুনকে কাঁথি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই মৃত্যু হয় তার।

মীনাক্ষীদেবীর অভিযোগ, “জয়দেব মাঝেমধ্যে আমাদের বাড়িতে আসত। এর আগেও ও একবার আমার স্বামী এবং বাড়ির লোকেদের খুন করবে বলে হুমকি। কিন্তু ও সত্যি সত্যি এমন করবে, তা ভাবতে পারিনি।’’

যদিও পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, জয়দেব মানসিক সমস্যা রয়েছে। তার বাবা আগেই মারা গিয়েছে। জয়দেবের পরিবার পুলিশকে জানিয়েছে, জয়দেব কল্যাণী বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল। সেখানে সে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছিল। ফলে সেখান থেকে জয়দেব বিতাড়িতও হয়। তারপর থেকে সে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে।

কাঁথি মহকুমা পুলিশের এক আধিকারিক এ দিন বলেন, “জয়দেবকে আটক করা হয়েছে। কিন্তু পরিবারের তরফে এখনও কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। অভিযোগ পেলেই তাকে গ্রেফতার করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন