Bus

Diesel Price hike: ইঞ্জিনের ক্ষতি সয়েই বাসের চাকা গড়াচ্ছে কেরোসিনে

বর্ধমান, হুগলি-সহ আরও কয়েকটি জেলায় ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে কেরোসিনে বাস চালানো শুরু হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা রোড ও গড়বেতার বাস মালিকদের একাংশও সেই পথেই হাঁটতে চলেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চন্দ্রকোনা রোড শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২১ ০৬:৩৫
Share:

সার দিয়ে দাঁড়িয়ে বাস। চন্দ্রকোনা রোড কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডে নিজস্ব চিত্র

বাড়েনি বাসের ভাড়া। অথচ ডিজেলের দাম বেড়েই চলেছে। এই অবস্থায় বাস নামিয়েও যাত্রী কম হওয়ায় বিপাকে পড়ছেন চন্দ্রকোনা রোড ও গড়বেতার বাস মালিকেরা। অগত্যা খরচ তুলতে কেরোসিনে বাস চালানোর ভাবনা বাস মালিকদের একাংশের। ইতিমধ্যে এই দুই এলাকার কয়েকজন মালিক চড়া দামে ডিজেল না কিনে, কিছুটা অল্প দামে কেরোসিনে বাস চালানো শুরু করে দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

বর্ধমান, হুগলি-সহ আরও কয়েকটি জেলায় ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে কেরোসিনে বাস চালানো শুরু হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা রোড ও গড়বেতার বাস মালিকদের একাংশও সেই পথেই হাঁটতে চলেছেন। ইতিমধ্যে একাধিক মালিক ডিজেলের খরচ সামলাতে না পেরে কেরোসিনে বাস চালানো শুরু করে দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। এতে ইঞ্জিনের ক্ষতি হবে জেনেও, সাময়িক ক্ষতির খরচ সামলাতে এই পথে হাঁটছেন কয়েকজন বাস মালিক। তাঁদের যুক্তি, ডিজেলের লিটার প্রতি দাম যেখানে ৯০ টাকার বেশি, সেখানে কেরোসিন তার চেয়ে লিটারে ২০-২৫ টাকা কম। ৫০ লিটার কেরোসিনে হাজার টাকার মতো বাঁচবে। সে ক্ষেত্রে ইঞ্জিনের যদি ক্ষতি হতে থাকে, তা হলে পরে তা সারিয়েও নেওয়া যাবে। জানা গিয়েছে, যে সব বাস পুরনো হয়ে গিয়েছে, ইঞ্জিনের শক্তিও কমে গিয়েছে, সেই সব বাসের মালিকেরা জ্বালানি হিসেবে কেরোসিনকে বেছে নিচ্ছেন।

চন্দ্রকোনা রোড কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডের উপর দিয়ে স্বল্পপাল্লা-দূরপাল্লা মিলিয়ে প্রায় ১৭০-১৮০টি বাস চলে। যার ৫০ শতাংশ বাস রাস্তায় নেমেছে। খরচের বহর দিন দিন বেড়ে চলায় অনেক মালিক বাস নামাননি। যেগুলি চলছে, সেগুলি থেকেও খরচ উঠছে না বলে জানাচ্ছেন মালিকেরা। তাঁরা বলছেন, ‘‘সব জিনিসের দাম বাড়ছে। পেট্রল, ডিজেলের দাম আকাশছোঁয়া। অথচ বাসের ভাড়া বাড়াচ্ছে না সরকার। এই অবস্থায় ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে বাস চালালে ক্ষতি অবধারিত।’’ তেলের দাম, যন্ত্রাংশের দাম, দেখভাল খরচা, কর্মীদের বেতন দেওয়ার পর অবশিষ্ট কিছু থাকে না, ঘুরে মালিকের পকেট থেকে দিয়েই বাস চালাতে হচ্ছে। একই ছবি গড়বেতাতেও। এখানে প্রায় ৮০টির মতো বাস চলাচল করে। বুধবার পর্যন্ত এর অর্ধেক বাস পথে নেমেছে। চন্দ্রকোনা রোডের মতো গড়বেতাতেও যাত্রী সংখ্যা খুব কম। এখানকার একজন বাস মালিক বলেন, ‘‘রথের দিন থেকে বাস চালাচ্ছি, সে দিন দু’হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে, মঙ্গলবার তিন হাজার টাকা ক্ষতি। প্রতিদিন পকেট থেকে দিয়ে কি আর বাস চালানো সম্ভব!’’

Advertisement

চন্দ্রকোনা রোড বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বরুণ চৈরা বলেন, ‘‘বাস পরিবহণের খরচ যে হারে বাড়ছে, অচিরেই এই ব্যবসা থেকে সরে আসতে বাধ্য হবেন মালিকেরা। তেল, যন্ত্রাংশ, দেখভালের খরচ, কর্মীদের বেতন— এ সব দিতেই চলে যাচ্ছে সব। সরকারের ভেবে দেখা উচিত।’’ একই মত গড়বেতা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক রামমোহন মণ্ডলেরও। তিনি বলেন, ‘‘এ ভাবে চলতে থাকলে বাস পরিবহণ শিল্পটাই শেষ হয়ে যাবে।’’ জেলা পরিষদের পূর্ত ও পরিবহণ কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষ বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার খুবই মানবিক, বাস পরিবহণ ব্যবসার সঙ্গে যুক্তদের বলব পরিস্থিতির কথা ভেবে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন