রাত বাড়লেই সুনসান রাস্তা। বাস মেলে না। অভিযোগ দীর্ঘদিনের। হলদিয়া-মেচেদা জাতীয় ও রাজ্য সড়ক, মেচেদা-খুকুড়দহ ও পাঁশকুড়া-ঘাটাল রুটের মত গুরুত্বপূর্ণ রুটে সাড়ে ৭টার পর থেকেই হয়রানির শিকার হন বাসিন্দারা।
সম্প্রতি বাসযাত্রী সংগঠনের পক্ষ থেকে রাজ্য পরিবহণ দফতরে অভিযোগ জানানো হয়। তারপরেই নড়েচড়ে বসেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিবহণ দফতর। শুক্রবার জেলা পরিবহণ দফতরের আধিকারিকের অফিসে বিভিন্ন বাস মালিক সংগঠন ও বাসযাত্রীদের সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়। পরিবহণ যাত্রী কমিটির অভিযোগ, হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য ও জাতীয় সড়কে মেচেদা কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড থেকে রাত ৮ টার পর অধিকাংশ রুটে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাত ৯ টা ৪০ মিনিট নাগাদ তারকেশ্বর থেকে হলদিয়াগামী শেষ বাস চললেও তা সব স্টপেজে থামে না। ফলে কলকাতা থেকে ট্রেনে আসা যাত্রীরা মেচেদা স্টেশনে নেমে আর বাস পান না। শেষ বাস ধরার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায়।
একইভাবে মেচেদা থেকে হলদিয়াগামী ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কে রাত ৯ টার পর বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে হলদিয়া থেকে মেচেদা স্টেশনে পৌঁছনো কিম্বা মেচেদা স্টেশনে নেমে হলদিয়া শহরে যাওয়ার জন্য চরম অসুবিধায় পড়তে হয় বহু নিত্যযাত্রীদের। মেচেদা থেকে ৪১ ও ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে পাঁশকুড়ার মেচগ্রাম পর্যন্ত রাস্তাতেও একই ছবি। রাত সাড়ে ৮ টার পর ফাঁকা হয়ে যায় রাস্তা। পাঁশকুড়া বাসস্ট্যান্ড, ঘাটাল সড়কেও রাত ১০ টার পর বাস মেলে না বলে অভিযোগ যাত্রী কমিটির।
এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেলার আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক সজল অধিকারী, আঞ্চলিক পরিবহণ কর্তৃপক্ষের সদস্য ও ময়নার বিধায়ক সংগ্রাম দোলাই, ডিসট্রিক্ট বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুকুমার বেরা, পরিবহণ যাত্রী কমিটির সহ-সম্পাদক নারায়ণ নায়েক।
যাত্রী কমিটি দাবি জানায়, মেচেদা-হলদিয়া ও পাঁশকুড়া-ঘাটাল রুটে রাত রাতে ১০ টা পর্যন্ত এবং মেচেদা–মেচগ্রাম রুটে রাত সাড়ে ৯ টা পর্যন্ত বাস চালাতে হবে।
বাস মালিকদের সংগঠন পূর্ব মেদিনীপুর ডিস্ট্রিক্ট বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুকুমার বেরা বলেন, ‘‘বিভিন্ন সড়কে বেআইনিভাবে বহু ট্রেকার, অটো চলাচল করে। তার ফলে অনেক বাসই লোকসানে চলে। তাই অনেক মালিক বাস তুলে নিয়েছেন।’’ তাঁর অভিযোগ, জেলা পরিবহণ দফতরের কাছে এ নিয়ে একাধিকবার দরবার করেও ফল মেলেনি। ওইসব ট্রেকার, অটো চলাচল বন্ধ করতে ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন।
বৈঠক শেষে সংগ্রাম দোলাই অবশ্য দাবি করেন, ‘‘জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’