কোথাও ভয়, কোথাও অজ্ঞানতা, কোথাও আবার লোভ— শিকার হচ্ছে বন্যপ্রাণী। ক্রমশ বিলুপ্তির দিকে এগোচ্ছে একাধিক প্রজাতি। এ বার উপকূল এলাকায় বন্যপ্রাণ রক্ষায় পড়ুয়াদের কাজে লাগাতে চাইছে বন দফতর।
পূর্ব মেদিনীপুরে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের সচেতন করতে শুরু হয়ে গিয়েছে অভিযান। স্কুলে স্কুলে বিলি করা হচ্ছে রঙিন ‘লিফলেট কিট’। যার মধ্যে থাকছে একটি পুস্তিকা, দু’টি পোস্টার এবং একটি লিফলেট।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বন আধিকারিক স্বাগতা দাস বলেন, “স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যে স্থানীয় বন্যপ্রাণ নিয়ে আগ্রহ বাড়াতে এই প্রচার। আমাদের জেলায় সরকারিভাবে এটি নতুন উদ্যোগ। ‘বন্যেরা বনে সুন্দর’ নামে একটি রঙিন লিফলেট কিট তৈরি করেছে বন দফতর। উপকূল এলাকায় নির্বিচারে বন্যপ্রাণী হত্যা বন্ধ করতে স্কুল পড়ুয়াদের পাশাপাশি গ্রামেও এই নিয়ে প্রচার চালাবেন বনকর্মীরাও।”
বন বিভাগ সূত্রে খবর, ‘ইন্ট্রিগ্রেটেড কোস্টাল জোন ম্যানেজমেন্ট’ প্রকল্পের মাধ্যমে এই লিফলেট কিট তৈরি হয়েছে। জেলার ৭০ কিলোমিটার নদী ও সমুদ্র উপকূল। সেখানে রয়েছে স্বাভাবিক বনভূমি। তা ছাড়া, হলদিয়া মোহনা, নন্দীগ্রাম, খেজুরি ও কাঁথিতে কয়েকশো হেক্টর ম্যানগ্রোভ বনভূমি রয়েছে। সেই বনভূমি এবং খাঁড়ি এলাকায় বিভিন্ন ধরণের স্তন্যপায়ী প্রাণী, সরীসৃপের বাস। অথচ মানুষেরই নির্বিচারে হত্যালীলায় চরম সঙ্কটে তারা।
বন দফতরের দাবি, বাড়ির ছোটরা সচেতন হলে তার প্রভাব পড়বেই সর্বত্র। তেমনটা মনে করছে শিমূলবেড়িয়া হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির শেখ জইদুল। তার কথায়, ‘‘পুস্তিকা পড়ে জেনেছি, ওই সব প্রাণীকে মেরে ফেলা ঠিক নয়। স্কুল থেকেও তাই বলেছে। আমরাও সকলকে বলছি।’’ সপ্তম শ্রেণির সুদর্শন জানাও বুঝেছে সে কথা, ‘‘বাঘরোল দেখে বাড়ির বড়রা ভয় পায়। কিন্তু আসলে বাঘরোলগুলো আমাদের ভয় পায়। সে কথা বলেছি বাড়ির সবাইকে।’’