দুর্ঘটনাগ্রস্ত: গাড়ি থেকে নামানো হচ্ছে দেহ। —নিজস্ব চিত্র।
পুজো শেষে সদ্য কেনা গাড়িতে চেপে বেড়াতে বেরিয়েছিলেন বাবা-মা ও দুই ছেলে। রবিবার ভোরে তমলুক থেকে খড়্গপুর আসার পথে বসন্তপুরে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে গাড়ি উল্টে মৃত্যু হল চার জনেরই। শেষ গোটা পরিবার। দুর্ঘটনায় মারা যান গাড়ির চালকও।
মৃত তরুণ পাখিরা (৫২), অতসী পাখিরা (৪৮) ও তাঁদের ২ ছেলে সৌম্যদীপ পাখিরা (২২) ও স্নিগ্ধ পাখিরা (১৮)-র বাড়ি তমলুক পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের ধারিন্দায়। এ দিন দুর্ঘটনার পরে খড়্গপুর গ্রামীণের বসন্তপুরে পৌঁছয় পুলিশ। দেহগুলি মেদিনীপুর মেডিক্যালে পাঠানো হয়। পুলিশ জানায়, গাড়িটি অত্যন্ত দ্রুত গতিতে ছিল। সম্ভবত অন্য কোনও গাড়িকে পাশ কাটাতে গিয়ে টায়ার ফেটে দুর্ঘটনা ঘটে।
তরুণবাবু তমলুক উত্তর চক্রের শিক্ষাবন্ধু ছিলেন। আর অতসীদেবী ছিলেন তমলুক জেলা হাসপাতালের নার্স। তাঁদের বড় ছেলে সৌম্যদীপ ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে মন্দারমণিতে এক সংস্থায় কাজ করছিলেন। আর ছোট ছেলে স্নিগ্ধ বর্ধমানের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
এ দিন সকালে ফের সকলে মিলে বেরিয়ে পড়েছিলেন। ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে তমলুক থেকে খড়্গপুরের দিকে দ্রুত গতিতে আসছিল তরুণবাবুদের গাড়ি। বসন্তপুর পেরিয়ে চালক নিয়ন্ত্রণ হারান। তারপর একটি ট্রেলারের পিছনে ধাক্কা মেরে গাড়িটি উল্টে যায়। এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, “গাড়িটি প্রথম লেনে (হাইস্পিড লেন) ছিল। সেখান থেকে কোনওভাবে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি দশ চাকার ট্রেলারের পিছনে ধাক্কা মেরে উল্টে যায়।” যদিও পুলিশের দাবি, দুর্ঘটনাস্থলে কোনও দশ চাকার ট্রেলারের দেখা মেলেনি।
একই পরিবারের চারজনের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ তমলুকের ধারিন্দা। পাখিরা দম্পতির বাড়িতে ভিড় করেছেন পরিজন ও পড়শিরা। মেদিনীপুর মেডিক্যালে এসেছিলেন তমলুকের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর চন্দন প্রধান। তবে তরুণবাবুরা কোথায় যাচ্ছিলেন, তা নিশ্চিত নয়। পরিবার সূত্রে খবর, ঝাড়খণ্ডের নেতারহাটে বেড়াতে যাওয়ার কথা ছিল তাঁদের। তবে শনিবার তরুণবাবুর কাকিমা মেদিনীপুরের হবিবপুরের বাসিন্দা মাধুরী পাখিরা মারা যান।